দুধে এন্টিবায়োটিক শনাক্তের পদ্ধতি নেই বিএসটিআইয়ের

দেশীয় পণ্যের একমাত্র সরকাররি মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) কাছে খাদ্যদ্রব্যে ক্ষতিকর এন্টিবায়োটিক ও কীটনাশক শনাক্ত করার মতো কোনো পদ্ধতি নেই। এছাড়াও দুধ পরীক্ষার জন্য ১৭ বছর আগে যে মানদন্ড ব্যবহার করা হতো এখনো সে পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। যা যুগোপযোগী নয়। উন্নত বিশের দেশগুলো যেখানে ২৩ থেকে ৩০টি মানদণ্ডের ভিত্তিতে দুধ পরীক্ষা করে সেখানে মাত্র নয়টি মানদণ্ড ধরে দুধ পরীক্ষা করে থাকে বিএসটিআই। 

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের একজন কর্মকর্তা বলেন, উন্নত দেশগুলোতে দুধে ভারী ধাতু, এন্টিবায়োটিক এবং কীটনাশক ব্যবহার করা হয়েছে কিনা তা যথার্থভাবে পরীক্ষা করা হয়। তারপর সেগুলো খাওয়ার উপযোগী বলে বিবেচিত হয়। যেমন, ভারতে ২৩টি মানদণ্ডের ভিত্তিতে এবং ১৮টি রাসায়নিক দূষণ চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে দুধ পরীক্ষা করা হয়। এর মাধ্যমে প্রায় ৩০০টি কীটনাশকের উপাদান শনাক্ত করা যায়।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের কৃষকরা না জেনে জমিতে অতিরিক্ত সার ব্যবহার করে থাকেন। যা আমাদের জন্য ভীষণভাবে ক্ষতিকর। এই বাস্তবতায় নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে বিএসটিআইয়ের পরীক্ষা আরও কঠোর হওয়া উচিত।

এ বিষয়ে বিএসটিআইয়ের পরিচালক (সিএম) এস এম ইসাহাক আলী বলেন, খাদ্যদ্রব্যে এন্টিবায়োটিক ও কীটনাশকের উপস্থিতি রয়েছে কিনা তা শনাক্ত করতে প্রথমে আমাদের নিরাপদ মানদণ্ডগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তারপর খাদ্যদ্রব্যে ক্ষতিকর উপাদান শনাক্তের সরঞ্জাম ক্রয় করা প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, বাজারে সহজলভ্য প্যাকেটজাত দুধে এন্টিবায়োটিক, কীটনাশক এবং ভারী ধাতু পাওয়ার পর বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউনের (বিএসটিআই) মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এরপর গত ২৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টার ও ফার্মেসি অনুষদ এক যৌথ গবেষণায় আরো ভয়াবহ চিত্র উঠে আসে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, বাজারে বিক্রিত প্রথমসারির সবগুলো ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত দুধে ডিটারজেন্ট ও এন্টিবায়োটিকের উপস্থিতি রয়েছে।

জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরীক্ষায় বাজারে সহজলভ্য প্যাকেটজাত দুধে এন্টিবায়োটিক, কীটনাশক এবং ভারী ধাতু পাওয়ার পর মান নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে বিএসটিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর ২৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টার থেকে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা যায় যে, বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত প্রথমসারির সবগুলো ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত দুধে ডিটারজেন্ট ও এন্টিবায়োটিকের উপস্থিতি রয়েছে।