কখনো নির্বাচনে হারেননি এরশাদ

৮৯ বছরের জীবনে নানা চড়াই-উতরাই পার করেছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার রাজনৈতিক জীবন ছিলো দারুণ বর্ণাঢ্যময়। সামরিক শাসন জারির মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করা এই ব্যক্তিটি তার শাসনামলের বিভিন্ন কৃতকর্মের জন্য নানা সময়েই বিতর্কিত হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে তার নামের পাশে 'স্বৈরাচারি' শব্দটি জুড়ে গেছে আরও বহু আগেই।

তিক্ত হলেও সত্য যে, জেনারেল এরশাদের শাসনামল নিয়ে যতই বিতর্ক থাকুক না কেন, ক্ষমতাচ্যুত হবার পরেও তিনি কখনো নির্বাচনের পরাজিত হননি।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ১৯৯১ সালে কারাবন্দী হন এরশাদ। ওই বছর নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করে বিএনপি। খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন ওই সরকারের প্রায় পুরোটা মেয়াদই কারাগারে থাকেন তিনি। ওই সময় এরশাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি দুর্নীতি মামলা হয়।

ওই সময় কারাগারে থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পাঁচটি আসনে জয়লাভ করেন এরশাদ। যদিও এরশাদের নির্বাচনী এলাকাগুলো ছিল তাঁর গ্রামের বাড়ি রংপুর এবং আশপাশের জেলায়।

পরবর্তী সময়েও এরশাদের এই জনপ্রিয়তার ধারা অব্যাহত ছিলো। ছয় বছর কারাভোগের পর ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি জামিনে মুক্তি পান। তবে আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে সংসদ সদস্যের পদ হারান এবং ২০০০ সালে তার দল জাতীয় পার্টিতে ভাঙন দেখা দেয়।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে 'স্বৈরাচার' হিসেবে পরিচিত হলেও প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি'র ক্ষমতার লড়াইয়ে এরশাদ বরাবরই বেশ মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। এককভাবে ক্ষমতা অর্জন করা যাবে না -এমন চিন্তায় দুই দলই পরবর্তী সময়ে এরশাদকে নানাভাবে কব্জায় রাখার চেষ্টা করে গেছে।

এর ফলশ্রুতিতে ২০০১ সালের অক্টোবরে নির্বাচনে এরশাদের জাতীয় পার্টি ১৪টি, মহাজোটের শরিক হিসেবে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ২৭টি আসন পায়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল বর্জন করলে ৩৪টি আসন নিয়ে বিরোধী দল হয় এরশাদের জাতীয় পার্টি। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ২২টি আসনে জয় পায় জাপা।