সামরিক শক্তিতে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল ভারত

দ্রুত সামরিক শক্তিতে ভয়ংকর হয়ে উঠার চেষ্টা করছে ভারত। আর তারই অংশ হিসেবে ২২টি মার্কিন অ্যাপাচি হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি করেছিল নয়াদিল্লি। এর মধ্যে পাঁচটি ভয়ংকর এই কপ্টার চলে এসেছে ভারতের হাতে। আজ শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের চারটি অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার অ্যাপাচি এএইচ ৬৪ ই ভারতে পৌঁছে দেয় মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থা বোয়িং। এর আগে গেল মে মাসে একটি পায় ভারত।

বোয়িং এক টুইটে চারটি হেলিকপ্টার ভারতের কাছে হস্তান্তরের কথা জানিয়েছে বলে খবর দিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম জি-নিউজ। ভারতের গাজিয়াবাদ বিমানঘাঁটিতে কপ্টারগুলো পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, অ্যাপাচি এএইচ ৬৪ ই হেলিকপ্টার বিশ্বের সর্বাধুনিক মাল্টি রোল কমব্যাট হেলিকপ্টার। এই হেলিকপ্টারগুলো অ্যাপাচি গার্ডিয়ান নামেও পরিচিত। এগুলোর আছে চার ব্লেডের অ্যাটাকিং কপ্টার। যেকোনো আবহাওয়ায় এসব হেলিকপ্টার হামলা চালাতে পারে। গাছের উচ্চতায় নেমে লক্ষ্যবস্তুকে চোখের নিমেষে গুঁড়িয়ে দিয়ে চলে যেতে পারে অ্যাপাচি হেলিকপ্টার। সেইসঙ্গে লক্ষ্যে সরাসরি আঘাত হানতে এই হেলিকপ্টারে রয়েছে নাইট ভিশন সিস্টেম। ফলে এগুলো সর্বাধুনিক আক্রমণাত্মক হেলিকপ্টার।

জি-নিউজ বলছে, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মার্কিন বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে করা চুক্তির আওতায় ভারত অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার অ্যাপাচি এএইচ ৬৪ ই হাতে পেল। চুক্তি মোতাবেক শনিবার ভারতের হাতে আসা অ্যাপাচি হেলিকপ্টারের প্রথম ব্যাচ এটি। এর পর আরও কয়েক ব্যাচে এ হেলিকপ্টার ভারতে পাঠাবে বোয়িং।

খবরে বলা হয়েছে, শেষ পর্যায়ের অ্যাসেম্বেলিং ও যাচাইয়ের পর এই হেলিকপ্টারগুলোকে পাঠানো হবে ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তের পাঠানকোটে বিমানবাহিনীর সেনাঘাঁটিতে।

এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারতীয় বিমানবাহিনীতে যোগ হয় চিনুক হেলিকপ্টার। এক সঙ্গেই এই দুই ধরনের হেলিকপ্টার কেনার চুক্তি হয়েছিল। প্রথম ব্যাচের চিনুক হেলিকপ্টার পৌঁছে যায় গুজরাটের মুন্দ্রা বিমানবন্দরে।

উল্লেখ্য, মার্কিন বিমানবাহিনীর সদস্যরা প্রচুর পরিমাণে অ্যাপাচি হেলিকপ্টার ব্যবহার করে। প্রায় ৩০০ কিলোমিটার বেগ পর্যন্ত উড়তে সক্ষম এই হেলিকপ্টারগুলো। অন্ধকারে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানতে এবং দ্রুত ওঠানামার ক্ষমতা এ হেলিকপ্টারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এক টানা প্রায় ৪৭৬ কিলোমিটার উড়তে পারে এটি।

একজন পাইলট ও গানার থাকেন হেলিকপ্টারটি পরিচালনা করার জন্য। একটি অ্যাপাচি হেলিকপ্টারে থাকে থার্টি এম এম মেশিনগান। হেলিকপ্টার থেকে প্রতি মুহূর্তে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ বার গুলি ছোড়া যায়। ১৬ এজিএম-১১ এ আর হেলফায়ার-২ অ্যান্টি ট্যাংক গাইডেড মিসাইল বহন করতে পারে এই হেলিকপ্টার। এ মিসাইল দিয়ে ট্যাংক ধ্বংস করা যায়। এ ছাড়া দুটা এআইএম-৯ সাইডউইন্ডার, চারটি এআইএম-৯২ স্টিংগার, মিস্ট্রাল ক্ষেপণাস্ত্রও বহন করতে পারে অ্যাপাচি। শত্রুপক্ষের রাডার ধ্বংস করতে পারে এই কপ্টার। বিশেষ করে, পাহাড়ি এলাকার জন্য খুবই উপযোগী অত্যাধুনিক এই হেলিকপ্টার।