‘আসামে বিদেশি অভিবাসীদের ৫০ শতাংশের বেশি বাংলাদেশি’

ভারতে বিদেশি অভিবাসীদের ওপর ২০১১ সালে যে জরিপ বা শুমারি করা হয় তার প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, আসাম রাজ্যে ৬৪ হাজার লোক এমন রয়েছেন যাদের সর্বশেষ (আসামে সেটেল হওয়ার আগে) বাসস্থান ছিল বাংলাদেশে। ফলে ওই শুমারি অনুযায়ী রাজ্যটিতে যে ১ লাখ ১০ হাজার বিদেশি অভিবাসী ছিল তার ৫৬ শতাংশই বাংলাদেশি।

প্রতীকি ছবি

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দশ বছরী (দশ বছর পর পর) ওই শুমারি অনুযায়ী, ১৯৯১ সালের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৫৬,৫৫০ জন বাংলাদেশি আসামে গেছে। এ ছাড়া ১৯৯২-২০০১ সালে মধ্যে ২১৯৮ জন, ২০০২-২০০৫ সালের মধ্যে ৯৮৪ জন, ২০০৭-২০১০ সালের মধ্যে ৭২২ জন এবং শুমারি শুরু হওয়ার আগে এক বছরের কম সময়ে ২২৮ জন বাংলাদেশি ভারতের ওই রাজ্যটিতে পাড়ি জমিয়েছে। আর ৩৪৫৫ জনের অভিবাসনের সময় কোনো রাষ্ট্র ছিল না।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুমারি অনুযায়ী সর্বশেষ বাসস্থানের হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ভারতের অন্যান্য রাজ্য এবং বিদেশি অভিবাসীর সংখ্যা ব্যাপকহারে হ্রাস পেয়েছে।

১৯৯১ সালের জরিপ অনুযায়ী আসাম রাজ্যে বিদেশি অভিবাসীর সংখ্যা ৩ লাখ ৩৯ হাজার। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অভিবাসীর সংখ্যা ২ লাখ ৮৮ হাজার।

তবে এর দশ বছর পরের শুমারিতে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যটিতে বিদেশি অভিবাসীর সংখ্যা কমে হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার, যার মধ্যে বাংলাদেশি অভিবাসী ১ লাখ ৬৪ হাজার।

অন্যদিকে, ২০১১ সালের শুমারিতে দেখা যাচ্ছে, ভারতের অন্যান্য রাজ্য থেকে আসামে মাইগ্রেট করেছে ৪ লাখ ৯৫ হাজার মানুষ।

জরিপের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, বাংলাদেশের বাইরে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, চীন, কুয়েত, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ভিয়েতনামসহ এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে আসাম রাজ্যে মাইগ্রেট করেছে। তবে এর মধ্যে কোনো দেশ থেকেই অভিবাসনের সংখ্যা ১০ হাজারে পৌঁছেনি।

এ ছাড়া ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা ও ওশেনিয়া অঞ্চল থেকেও আসাম রাজ্যে মাইগ্রেট করেছে মানুষ। তবে এর মধ্যে শুধু আফ্রিকা থেকে অভিবাসনের সংখ্যা ১০ হাজার অতিক্রম (১২ হাজার ৩০৩) করেছে।

জরিপের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমটি বলছে, ভারতের অন্যান্য রাজ্য থেকে যারা আসামে মাইগ্রেট করেছে তারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শহরাঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছে। অন্যদিকে, ভারতের বাইরে থেকে যারা অভিবাসন করেছে তারা প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছে।