মোদি সরকারের বিরুদ্ধে একাট্টা কাশ্মিরের রাজনৈতিক নেতারা

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরের ‘স্পেশাল স্টেটাস’ তথা বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করলে ফল ভাল হবে না বলে একাট্টা হয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সেখানকার সবকটি রাজনৈতিক দল।

সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী ফারক আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতিদের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, এ ধরনের কোনো চেষ্টা মোদি সরকারের পক্ষ থেকে করা হলে সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দেওয়ার চেষ্টা করবেন তারা।

প্রসঙ্গত, গত ৬ দশকেরও বেশি সময় ধরে সাংবিধানিকভাবে বিশেষ মর্যাদা পাচ্ছে জম্মু ও কাশ্মির। সংবিধানের ৩৫ এ ধারা ও ৩৭০ ধারা মোতাবেক স্থানীয় ভূমিপুত্র ছাড়া ভারতের আর কোনো নাগরিকের সেখানে স্থায়ী নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার নেই।

৩৭০ ধারা অনুযায়ী জম্মু ও কাশ্মিরের নাগরিকরা আরও কিছু বিশেষ সুবিধা পান। কিন্তু এই দুই ধারা বিলোপের ব্যাপারে বহুদিন ধরে সওয়াল করছে বিজেপি তথা রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ বা আরএসএস। বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহারে বার বার এসেছে এই দুই ধারা বিলোপের প্রসঙ্গ। কিন্তু সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে তা সম্ভব হয়নি। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদি জমানার প্রথম মেয়াদেও রাজ্যসভায় সংখ্যালঘু ছিল বিজেপি তথা এনডিএ।

কিন্তু এখন কাশ্মিরের রাজনৈতিক দলগুলো মনে করছে, এবার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালনে পদক্ষেপ নিতে পারেন মোদি-অমিত শাহরা। আরএসএসের চাপ তো এ ব্যাপারে চাপ রয়েছেই। তাছাড়া কাশ্মির উপত্যকায় সন্ত্রাস দমনের নামে হঠাৎ ৩৫ হাজার সেনা মোতায়েন করা, অমরনাথ যাত্রা স্থগিত রাখা ইত্যাদির মধ্যে মোদি সরকারের বৃহত্তর পরিকল্পনার নকশা দেখছেন সেখানকার রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা।

এদিকে, সোমবার সকালে আবার মন্ত্রিসভার বৈঠকও ডেকেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

ফারুক আবদুল্লাহ-মেহবুবা মুফতিদের আশঙ্কা, সংবিধানের ৩৫ এ ধারা বিলোপ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারে মোদি সরকার। এ ব্যাপারে উপত্যকায় প্রতিবাদ হলে তা দমনের জন্যই বিপুল সংখ্যায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে রোববার বিকেলে শ্রীনগরের একটি হোটেলে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার পরিকল্পনা করেন দলগুলোর নেতারা। কিন্তু পুলিশ সব হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়, কোনো রকম রাজনৈতিক মিটিংয়ের অনুমতি দেওয়া যাবে না। ফলে শেষমেশ ফারুক আবদুল্লাহর বাড়িতে সর্বদলীয় বৈঠক হয়।

ওই বৈঠকের পর মেহবুবা মুফতি বলেন, সংবিধানের ওই দুই ধারা বিলোপের ব্যাপারে কেন্দ্র যাতে কোনো পদক্ষেপ না নেয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা কোনো উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিতে গেলে রাজনৈতিকভাবে সর্বাত্মক প্রতিবাদ হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

মেহবুবা আরো বলেন, ‘সরকার কেন্দ্রীয় এজেন্সি লেলিয়ে দিয়ে এখানকার রাজনৈতিক দলগুলোকে দুর্বল করতে চাইছে। সেই কারণেই ক্রিকেট দুর্নীতির অভিযোগ এনে ফারুক সাহেবকে চণ্ডীগড়ে জেরার জন্য ডাকা হয়েছিল। কিন্তু এভাবে আন্দোলন থামানো যাবে না।’