কাশ্মির ইস্যু: আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ভারত

জম্মু-কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল এবং রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নিয়ে দুটি প্রশাসনিক এলাকায় ভাগ করা নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে চাপের মুখে পড়লো পড়লো ভারত। ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার অজয় বিসারিয়াকে বহিষ্কার করে গতকাল বুধবার কূটনৈতিক সম্পর্ক কার্যত ছিন্ন করেছে পাকিস্তান। পাশাপাশি কাশ্মির পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ।

অন্যদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরও জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মিরকে দেওয়া বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত ৩৭০ ধারা বাতিলের কথা তাদের আদৌ জানায়নি নরেন্দ্র মোদি সরকার। অথচ ভারতীয় গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয় যে, উদ্যোগ নেওয়ার আগেই বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রসহ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্য দেশকে জানিয়েছে মোদি প্রশাসন।

এদিকে, লাদাখ আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ায় ভারতের ওপর ক্ষুব্ধ চীনও। মঙ্গলবার চীনের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতের উদ্যোগ অগ্রহণযোগ্য।

কাশ্মিরর পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল বুধবার জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন ইমরান খান। যেখানে সরকারি আমলাসহ দেশটির শক্তিধর সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

ওই বৈঠকের পরই ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত করার ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। সেইসঙ্গে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় দূতকে বহিষ্কারসহ নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত পাক দূতকে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পাশাপাশি ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় বিমানের সকল ফ্লাইটের জন্য নিজেদের আকাশসীমা আংশিকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে পুলওয়ামা হামলার পর পাক পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক বসায় দিল্লি। ফলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বড় ধাক্কা খেয়েছিল। ভারতীয় সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যম বলছে, পাকিস্তানের এই উদ্যোগে এখন বাণিজ্য পুরোপুরি বন্ধ হবে।

অন্যদিকে, লাদাখ নিয়ে বেইজিং ও দিল্লির মতবিরোধ রয়েছে। ফলে ভারতের এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ চীনও। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাক-ভারত বিবাদে তারা পক্ষ নেবে না। কিন্তু চীনের স্বার্থে ঘা লাগলে তা সহ্য করা হবে না।

কূটনীতিকদের একাংশের মতে, সামনেই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন। সেখানে কাশ্মির ইস্যুটি উপস্থাপন করবে পাকিস্তান। অন্যদিকে, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে সাহায্যের বদলে কাশ্মির ইস্যুতে আমেরিকার সমর্থন পেতে পারে পাকিস্তান।

সম্প্রতি ওয়াশিংটন সফরের সময় পাক প্রধানমন্ত্রীকে পাশে বসিয়ে কাশ্মিরে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে সবকিছু মিলিয়ে চাপে পড়তে পারে ভারত।