'মুখ বন্ধ করতেই বারবার হামলা হচ্ছে আমার ওপর'

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি হওয়ার আগে-পরে অন্তত সাতবার হামলার শিকার হয়েছেন নুরুল হক নুর। দেশের অন্যতম জাতীয় একটি দৈনিকের সাথে নিজেই এই বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। সর্বশেষ গত ১৪ আগস্ট পটুয়াখালীর গলাচিপা থেকে দশমিনা যাওয়ার পথে উলানিয়া বাজারে তার ওপর হামলা হয়।

এসব হামলা সম্পর্কে ভিপি নুরুল হক বলেন, সরকার বা সরকারি দলের ছাত্রসংগঠন চায় না বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ বিরুদ্ধ মতপ্রকাশের কোনো মঞ্চ হয়ে উঠুক। তাই তারা আমাদের ওপর বারবার হামলা করে যাচ্ছে।

নুরুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ, ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তার ওপর সাতবার হামলা চালিয়েছেন। বিষয়গুলো পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করেও কোনো লাভ হয়নি। এরপর ভিপি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর কাছেও এসব হামলার বিচার দাবি করেছেন। কিন্তু কারোরই শাস্তি হয়নি।

এদিকে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের অন্যান্য নেতারা ভাবছেন, দেশে এখন অন্যায়ের প্রতিবাদ করার সাহস কারোরই নেই। আইন করে, মামলা দিয়ে ও হামলা করে সাধারণ মানুষের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের ব্যানারে সাধারণ মানুষ আবারও প্রতিবাদ করেছে। তাই তাদের নেতা নুরসহ অন্যান্য নেতাদের ওপর হামলা করে তাদেরকে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সংগঠনটির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৩০ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে নুরসহ পরিষদের অনেক নেতাকর্মীর ওপর হামলা হয়। এরপর গত ২৪ জানুয়ারি বাংলা একাডেমিতে নুরুল হকের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায়। এছাড়া গত ১১ মার্চ ও ১২ মার্চ ডাকসু নির্বাচনের সময়ে পর পর দুই দিন তার ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। ২ এপ্রিল এস এম হলে নুরুল হকের ওপর ডিম নিক্ষেপ করা হয়। এই ঘটনার পরদিন বগুড়ায় একটি ইফতার অনুষ্ঠানে নুরকে বেধড়ক পেটানো হয়। এরপর গত ২৫ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে ধাওয়া দেয়।

এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের সঙ্গে নুরের কোনো বিরোধ নেই। তাকে যদি টার্গেট করে ছাত্রলীগ হামলা করত, তাহলে সে এভাবে ঘুরে বেড়াতে পারতো না। নুরুল হক নিজেও একসময় ছাত্রলীগের পদধারী নেতা ছিলো।

পটুয়াখালীতে তাকে মারধরের ব্যাপারে গোলাম রাব্বানী বলেন, নুরুলের জায়গা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। কিন্তু সে বগুড়াসহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছে। ভবিষ্যতে নির্বাচন করবে—এমন একটা ভাব। এতে স্থানীয় লোকজন বিরক্ত হয়ে পটুয়াখালীতে তাকে মারধর করতে পারে।

নুরুল হকের ওপর হামলা করা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রাব্বানী বলেন, বিষয়টি দেখবে হল প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই পক্ষের অতি উৎসাহে এমন ঘটনা ঘটেছে। এরচেয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না।