শোকের দিনে বঙ্গবন্ধু-প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙলো ছাত্রলীগ

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২১ আগস্টের শোকের দিনে হলের বিভিন্ন কক্ষে ভাঙচুর চালিয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ছাত্রলীগের একাংশ। বুধবার দিনগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ মুখতার ইলাহী হলের বেশ কয়েটি কক্ষে এই হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। 

এ সময় চেয়ার-টেবিলের পাশাপশি ভাঙচুর করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও। তবে সংঘর্ষে কেউ হতাহত হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় ২১ আগস্ট উপলেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নোবেল শেখ ও তার অনুসারীরা ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার চত্বরে মোমবাতি প্রজ্জলন করতে যান। কিন্তু ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ফয়সাল আযম ফাইনের অনুসারীরা তাদের মোমবাতি প্রজ্জলনে বাধা দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি ও পরে হাতাহাতি হয়।

এর কিছুক্ষণ পর ফয়সাল আযম ফাইনের সমর্থকরা বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলমের কক্ষে ভাঙচুর চালায়। তার পর শহীদ মুখতার ইলাহী হলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া ও হল ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান আলীর কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় কক্ষে থাকা বিভিন্ন জিনিসপত্রের পাশাপাশি জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিও ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

তুষার কিবরিয়া বলেন, ফয়সাল আযম ফাইন ও তার অনুসারীরা প্রথমে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে বাধা দেয়। পরে হলের বিভিন্ন কক্ষে ভাঙচুর চালায়। বিদ্রোহী গ্রুপ থাকতেই পারে। কিন্তু তাই বলে আগস্ট মাসে কর্মসূচিতে কেউ বাধা দিতে পারে না। তাছাড়া শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে হামলা চালিয়ে জাতির পিতার ছবি ভাঙচুরের মাধ্যমে তারা ধৃষ্টতা দেখিয়েছে।

তিনি বলেন, বিষয়টি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে অবহিত করা হয়েছে এবং সেখান থেকে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

নোবেল শেখ জানান, শোকের মাসে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে বাধা ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুরকারীরা কখনো ছাত্রলীগের নেতাকর্মী হতে পারে না। তাদের ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুরের কথা অস্বীকার করে ফয়সাল আযম ফাইন বলেন, কিছু বহিরাগত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়ার কক্ষে ইয়াবা সেবন করছিল। তাই তারা সেখানে গিয়ে বহিরাগতদের হল থেকে বের করে দেন। এর পর সভাপতির অনুসারীরা তাদের ওপর দোষ চাপানোর জন্য বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী ছবি ভাঙচুর করে।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট তাবিউর রহমান বলেন, ভাঙচুরের ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত। ঘটনার পর পরই প্রভোস্ট বডি জরুরি মিটিং করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাবে। যাতে দোষীরা দ্রুত শাস্তি পায়।