খালেদার মতো বারোটা পর্যন্ত ঘুমালে কি খুশি হতেন? রুমিনকে প্রধানমন্ত্রী

বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সকল প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করতে নয়, সব প্রতিষ্ঠানকে সক্রিয় রাখতেই আমি সর্বদা সচেষ্ট থাকি। তা না করে সংসদ সদস্যের নেত্রী খালেদা জিয়ার মতো যদি ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটাতাম তাহলে কি এমন প্রশ্ন করে খুশি হতেন?

বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি রুমিন ফারহানার প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

সংসদে বিএনপির নেত্রী রুমিন ফারহানা প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন রাখেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুগ্রহ করে বলবেন কী, দেশে বর্তমানে মানুষ হত্যা থেকে মশা মারা পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রয়োজন হয়। যা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেঙে পড়া, অকার্যকর হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। অথচ কোন কার্যকর রাষ্ট্রের পূর্বশর্ত প্রাতিষ্ঠানিক সফলতা। তাহলে এই অকার্যকর প্রতিষ্ঠানগুলো কি রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারের সার্বিক ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরে না?’

এই প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আর সরকার প্রধানের দায়িত্ব হচ্ছে, সব মন্ত্রণালয়ের কাজের সমন্বয় করা, মন্ত্রীদের কাজের তদারকি করা। জনগণ আমাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে। আরাম আয়াস করতে আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব গ্রহণ করিনি।’

তিনি বলেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। যিনি তার পুরো জীবনটাই এই দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। তার কন্যা হিসেবে জনগণের প্রতি আমার এক ধরনের দায়বদ্ধতা আছে। আমি সেটাই প্রতিপালনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। সে জন্যই দিনরাত পরিশ্রম করি। আমার এই শ্রম কোনো প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করতে নয় বরং সব প্রতিষ্ঠানকে আরও বেশি সক্রিয় রাখতে সদাসর্বদা সচেষ্ট থাকি।’

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার নিরলস প্রচেষ্টা এবং আমাদের জনগণের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ বাংলাদেশ বিশ্বে একটা মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান অকার্যকর থাকলে এমন সব অর্জন সম্ভব হতো না। বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ রাষ্ট্রযন্ত্র ভালোভাবে কাজ করছে। এটা না হলে প্রশ্নকারী সংসদ সদস্যের নেত্রী খালেদা জিয়ার মতো ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটালে কি উনি প্রশ্ন করে খুশি হতেন?’

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অকার্যকর রাষ্ট্রের উদাহরণ তো বিএনপি সৃষ্টি করেছিল। তারাই রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতেন রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়- এমন ব্যক্তির কাছ থেকে। তখনকার প্রধানমন্ত্রী ঘুমিয়ে থাকতেন আর তার পুত্র হাওয়া ভবন থেকে মনমতো সিদ্ধান্ত নিত। তার সরকারের মন্ত্রী, সচিবরা হাওয়া ভবন থেকে নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতেন।’