তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লাহও আটক

ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের তিন তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী ৮৩ বছর বয়সী ফারুক আব্দুল্লাহকেও আটক করলো বিজেপি সরকার। আইন প্রয়োগে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে জননিরাপত্তা আইনে তাকে আটক দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া আগে থেকেই বন্দি আছেন সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আব্দু্ল্লাহ।

গত ৫ আগস্ট নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে মুসলিম অধ্যুষিত জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেয়। সেইসঙ্গে বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত রাজ্যটিকে ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হয়।

এর পর ভারত সরকার কাশ্মিরের কয়েক শ রাজনৈতিক নেতাকে আটক করে। তখন থেকেই লোকসভায় উপস্থিত হননি ফারুক আব্দুল্লাহ। বিষয়টি নিয়ে গত ৬ আগস্ট এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে প্রথম প্রশ্ন তোলেন, লোকসভায় ফারুক আব্দুল্লাহ অনুপস্থিত কেন?

সে সময় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জবাব দেন, তাকে কেউ গ্রেফতার করেনি, আটকেও রাখেনি। নিজের ইচ্ছায় তিনি বাড়িতে আছেন।

এদিকে, আজ সোমবার ফারুক আবদুল্লাহ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকার ও জম্মু-কাশ্মির সরকারের কাছে জানতে চায় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এর পরই সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সোমবারই তার বিরুদ্ধে পাবলিক সেফটি অ্যাক্টে অভিযোগ আনা হয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, জননিরাপত্তা আইন অনুযায়ী ফারুক আব্দুল্লাহকে সর্বাধিক দুই বছর বিনা বিচারে আটকে রাখা যেতে পারে।

অবশ্য এর আগেই ফারুক আব্দুল্লাহর দীর্ঘদিনের বন্ধু তথা এমডিএমকে নেতা ভাইকো অভিযোগ করেন যে, জম্মু-কাশ্মিরের ওই বর্ষীয়ান নেতাকে বেআইনিভাবে আটকে রাখা হয়েছে। আর সোমবার ফারুক আব্দুল্লাহর মুক্তি দাবি করেন ভাইকো।

কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভাইকো ফারুক আবদুল্লাহর আত্মীয় নন। তিনি আইনের অপব্যবহার করে ফারুকের মুক্তি চাইছেন।

খবরে বলা হয়েছে, এই প্রথম মূলস্রোতের কোনো রাজনীতিকের বিরুদ্ধে জননিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করা হলো। ফারুক আব্দুল্লাহ তিনবার জম্মু-কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। বর্তমানে তিনি সংসদ সদস্য।

পর্যবেক্ষকদের মতে, কেন্দ্রীয় সরকার আশঙ্কা করেছিল, ফারুক আব্দুল্লাহ সাংবাদিকদের সামনে আপত্তিকর কিছু বলতে পারেন। চলতি মাসের শেষেই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন বসবে।তার আগে ফারুক আব্দুল্লাহ সমালোচনা করলে কেন্দ্রীয় সরকারকে অস্বস্তিতে পড়তে হতো।