১১টি বিয়ে করে কারাগারে হামিদা

সংসারের ফাঁদ পেতে একের পর এক ১১টি বিয়ে করে অবশেষে ধরা খেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হামিদা বেগম। গত বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হামিদা হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।

হামিদা বেগম সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের কলেজপাড়ার মৃত বালু মিয়ার মেয়ে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, পারিবারিকভাবে হামিদার প্রথম বিয়ে হয় সরাইল সদরের বড্ডাপাড়া গ্রামের প্রবাসী আলমগীর মিয়ার সঙ্গে। ১০ বছর সংসার করার পর তিনি ইব্রাহিম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। পরে তালাক দিয়ে তার কাছ থেকে দেনমোহর ও অন্যান্য পাওনা বাবদ প্রায় নয় লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় হামিদা।

এরপর ব্যবসায়ী ইব্রাহিমকে সংসার করা অবস্থাতেই বাপ্পী নামের আরেক ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলেন হামিদা। এর মাঝে ইব্রাহিমের কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়ে বাপ্পীর সঙ্গে নতুনভাবে সংসার শুরু করেন তিনি।

কিন্তু মাত্র মাস কয়েক পরেই বাপ্পীকে ছেড়ে সরাইল সদরের বাসিন্দা রেজেক আলীর সঙ্গে আবারো নতুনভাবে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক গড়েন হামিদা। এর আগে বাপ্পীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ কব্জা করেন।

এসব কাণ্ড-কারখানা দেখে গ্রামের বাড়ি কালীকচ্ছ থেকে হামিদাকে বিতাড়িত করেন গ্রামের মাতবররা। বাধ্য হয়ে গ্রাম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা শুরু করেন তিনি।

এই সময় প্রবাসী ও ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে এরপর বিয়ে ছাড়া রাত্রিযাপনের অপরাধে মামলার ভয় দেখিয়ে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া শুরু করেন হামিদা। সর্বশেষ গত ২৩ জুন ১০ নম্বর স্বামী জহিরুল ইসলামের সবকিছু হাতিয়ে নিয়ে জহিরুলের বন্ধু আবদুল্লাহকে বিয়ে করেন তিনি।

এই ঘটনায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর আদালতে হামিদার বিরুদ্ধে একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউপির দৌলতপাড়ার বাসিন্দা মো. জহিরুল ইসলাম। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে হামিদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দেন।

এ ব্যাপারে কালীকচ্ছ এলাকার বাসিন্দা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এই নারীর কারণে এখানকার অনেক মানুষ অতিষ্ট। হামিদা প্রতারণার পর মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা তার পেশা। এ বয়সে এই নারী একে একে ১১টি বিয়ে করেছে।