বাদশাহী আপ্যায়ন, কিন্তু তিস্তা-রোহিঙ্গায় নীরব নয়াদিল্লি

ভারত সফরে দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনােকে বাদশাহী আপ্যায়ন করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মধ্যাহ্নভোজের আপ্যায়নে পোলাও থেকে শুরু করে চেন্নাইয়ের মালপোয়াসহ হরেক রকমের আড়ম্বরপূর্ণ ভেজিটেরিয়ান খাবার ছিল। কিন্তু এতো আয়োজন আর চুক্তির মধ্যেও রোহিঙ্গা আর তিস্তা চুক্তি ইস্যুতে যেন নীরব নয়াদিল্লি।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে রাষ্ট্রের দুই শীর্ষ প্রধানের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরার জনগণের উন্নয়নে ফেনী নদীর পানি উত্তোলন ও বন্দর ব্যবহারসহ একাধিক চুক্তি এবং সমাঝোতা সাক্ষর হয়। কিন্তু বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের চাহিদা তিস্তার পানি বন্টন এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কার্যকর কোনো ঘোষণা আসেনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দিল্লির ঐতিহাসিক হায়দ্রাবাদ হাউজে শনিবার অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীকে আড়ম্বরপূর্ণ ভেজিটেরিয়ান একাধিক খাবার দিয়ে মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়ন করা হয়। খাবারের টেবিলে উত্তর ভারতের বিখ্যাত খাবার দই পাপরি, বাদশাহী পোলাও, মাশরুমের হরেক পদ, শাহী ডাল এবং চেন্নাইয়ের মালপোয়াসহ অসংখ্য আইটেম ছিল। হলে মৃদু গানও চলছিলো।

যৌথ ইশতেহার থেকে জানা গেছে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জনগণের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ ভারতকে গ্যাস সরবরাহ, ফেনী নদীর পানি উত্তোলনসহ বন্দর ব্যবহারের জন্য রাজি হয়েছে। ত্রিপুরার পানির চাহিদা মেটাতে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে ভারতকে উত্তোলনের অনুমতি দিয়ে দুই দেশের মধ্যে সমাঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশের দীর্ঘ দিনের দাবি তিস্তার পানি বন্টন চুক্তিতে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। দুইদেশে যৌথ ইশতেহারে ভারত আগের মতোই অতি দ্রুত এ বিষয়ে সমাধান আসবে বলে মন্তব্য করেছে। যৌথ ইশতেহারে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কোনো মন্তব্য করেননি। রোহিঙ্গাদের বলা হয়েছে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী। এ ইস্যুতে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়ার কোনো তথ্যও যৌথ ইশতেহারে পাওয়া যায়নি। কেবলমাত্র রোহিঙ্গাদের জন্য আরও মানবিক সহায়তা (ত্রাণ) দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।