সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব!

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যার সময়কালীন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ গায়েব করে দেয়া হয়েছে এমন অভিযোগে প্রভোস্ট কার্যালয় ঘিরে রেখেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

প্রভোস্ট এর অফিস ঘেরাও করেছেন শিক্ষার্থীরা

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রাত ২টা ৬ মিনিটের পর আর কোন ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না। ওই ফুটেজ পেলে হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত জানা যেত। এছাড়া একাধিক শিক্ষার্থী মোবাইলে ভিডিও করার কথা শোনা গেলেও তার কোনটিই এখনো পাওয়া যায়নি।

এ প্রসঙ্গে মিহি নামে বুয়েটের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা সিসিটিভি ফুটেজের জন্য প্রভোস্টের রুম অবরুদ্ধ করে রেখেছি। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হবে আমরা এই জায়গা ছাড়বো না।’

ফাহাদ হত্যার বিচার দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। যার অংশ হিসেবে আজ দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বুয়েট অভিমূখে বিক্ষোভ করবেন শিক্ষার্থীরা।

ওই হলের সিসি টিভির ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের মাধ্যমে খুনীদের চিহ্নিত করার দাবিও জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় দেশের সকল ক্যাম্পাসে এক যোগে আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দেবে তারা।

উল্লেখ্য, রোববার রাত তিনটার দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলের দ্বিতীয়তলা থেকে আবরার ফাহাদ (২১) নামে এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, রবিবার রাত আটটার দিকে একদল ছাত্র আবরারকে তার রুম থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে রাত দুইটার দিকে শেরে বাংলা হলের প্রথমতলা ও দ্বিতীয়তলার মাঝামাঝি জায়গায় ফাহাদের মরদেহ দেখতে পায় অন্য শিক্ষার্থীরা। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন লক্ষ্য করা গেছে। শিক্ষার্থীদের ধারণা ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

গতকাল সন্ধ্যায় ফাহাদকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই কক্ষে উপস্থিত থাকা বুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু এমনটাই দাবি করে বলেছেন, ‘ফাহাদকে শিবির সন্দেহে রাত ৮টার দিকে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে আনা হয়। সেখানে আমরা তার মোবাইলে ফেইসবুক ও মেসেঞ্জার চেক করি। ফেইসবুকে বিতর্কিত কিছু পেজে তার লাইক দেওয়ার প্রমাণ পাই। সে কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। তার শিবির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাই।’

এই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘প্রমাণ পাওয়ার পরে চতুর্থ বর্ষের ভাইদের খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে বুয়েট ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার সেখানে আসেন। একপর্যায়ে আমি রুম থেকে বের হয়ে আসি। এরপর হয়তো ওরা মারধর করে থাকতে পারে।'

চকবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাতে বুয়েট কর্তৃপক্ষর মাধ্যমে খবর পেয়ে শেরেবাংলা হল থেকে ওই ছাত্রর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনা সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে শিবিরের সদস্য অভিযোগে তাকে পেটানো হয়েছিল এরকম কিছুটা শুনতে পেরেছি।’