কুয়েতে ইন্টারনেট দাসীর রমরমা বাজার

ইন্টারনেট দুনিয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়ে গৃহকর্মীদের দাস বানানোর রমরমা ব্যবসা চলছে কুয়েতজুড়ে৷ ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে নারীদের নিয়ে এ বাজার গড়ে তোলা হয়েছে।

তবে বিট্রিশ গণমাধ্যম বিবিসি এ সংক্রান্ত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পরই নড়েচড়ে বসেছে কুয়েত প্রশাসন।

বিবিসি নিউজ অ্যারাবিক জানায়, গুগল ও অ্যাপলের অ্যাপের মাধ্যমে ইন্টারনেটে এই ব্যবসার পাশাপাশি, ফেসবুক মালিকানাধীন ইন্সটাগ্রামেও সক্রিয় চক্রটি৷ অনলাইনের মাধ্যমে নারী গৃহকর্মীদের ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। বিক্রির সময় হ্যাশট্যাগে লেখা হয়েছে ‘মেইডস ফর ট্রান্সফার’কিংবা ‘মেইডস ফর সেল’।

আরব দেশগুলোতে বাড়ির কাজের লোক কেনাবেচার অভিযোগ দীর্ঘদিনের৷ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, বাহরাইনসহ বিভিন্ন দেশে যাওয়া অনেকেই এই ধরনের কাজে নেমে চরম হেনস্থার শিকার হন বলে বিভিন্ন সময়ে খবর উঠে আসে৷ এবার যেভাবে অনলাইনে কুয়েত থেকে দাস শ্রমিক কেনাবেচার বিষয়টি তুলে ধরেছে বিবিসি তাতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷

খবরে বলা হয়েছে, প্রতিবেদন প্রকাশের পরই বিজ্ঞাপন সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেয় প্রশাসন৷ সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়৷ তাতে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে তারা এ ধরনের আর কোনও কাজ করবে না।

বিবিসির অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুয়েতের পথেঘাটে চলাফেরার সময় আপনি দাস নারীদের দেখতে পাবেন না। তাদের ঘরের মধ্যে বন্দি করা হয়৷ মৌলিক অধিকারগুলোও থাকে না। তারা ছুটি পায় না৷ বিশেষ অ্যাপ ব্যবহার করে এই দাসীদের ছবি দেখা সম্ভব৷ তাদের কেনাবেচাও হয় অনলাইনে৷ গোপনে সেই দাস নারীদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে বিবিসি প্রতিনিধিরা৷ উঠে আসে চরম অমানবিক দিকটি৷ তার পরই রিপোর্ট প্রকাশ হয়৷ এর ফলে আরব দুনিয়ায় চলতে থাকা প্রাচীন দাস ব্যবসার আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারে দুনিয়া।

খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তান, নেপাল, ভারত, বাংলাদেশের বহু নাগরিক কাজের জন্য কুয়েতে থাকেন৷ এই সব দেশের নারীরা ক্রমে কুয়েতের দাস ব্যবসার শিকার হয়ে পড়েন৷ প্রবল অত্যাচার সহ্য করে তারা টিকে রয়েছেন বলেই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে৷

এ ব্যাপারে কুয়েত প্রশাসনের কর্মকর্তা ড. মুবারক আল আজিমি বলেছেন, তদন্তের পর অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে৷ ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণও দেবে সরকার৷