গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় ভিপি নুর

গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় ভুগছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরল হক নুর। মঙ্গলবার দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ত্যাগ করার সময় ভবনের নিচে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ আশঙ্কার কথা জানান।

এর আগে দুপুরে তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। গত ২২ ডিসেম্বর ডাকসু ভবনে হামলার ঘটনায় ভিপি নুরসহ তার বেশ কয়েকজন অনুসারী আহত হন। এরপর থেকে এতদিন তিনি ঢামেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ত্যাগের সময় ভিপি নুর সাংবাদিকদের বলেন, ডাকসুতে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আর মাত্র তিন মাস বাকি আছে। কিন্তু ইতোমধ্যে তার নামে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাকে যেনো দ্রুত গ্রেপ্তার করা যায় এবং তিনি যেনো জামিন না পান, সে জন্য তাকে তাড়াহুড়ো করে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি ডাকসু ভবনে হওয়া হামলার বর্ণনা দিয়ে তিনি আরো বলেন, ঘটনার দিন ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন কক্ষের লাইট নিভিয়ে তাদের ওপর হামলার চালায়। তার ভাই আমিনুরকে পিস্তলের বাট দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে ভবনের তিন তলা থেকে ফেলে দেয়। পাশাপাশি তিনিসহ তার অন্য সহযোগীদেরও ওইদিন একইভাবে মারধর করে।

বর্তমান সরকারের দুঃশাসন ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কথা বলায় তাকে হত্যার উদ্দেশে এই হামলা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে নুর বলেন, তিনি এখন সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছেন না, ঠিকভাবে হাঁটতেও পারছেন না। কাশলে বুকের পাঁজরে ব্যথা হচ্ছে। এমনকি চোখে ঝাপসা দেখার পাশাপাশি ভার্টিগো হয়ে তার মাথাও ঘুরছে। এসব কারণে তিনি চিকিৎসার ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

তার ওপর আটবার হামলা হয়েছে উল্লেখ করে ডাকসু ভিপি বলেন, ছাত্রলীগ যেভাবে তার ওপর বারবার হামলা চালাচ্ছে, এদের যদি বিচার না হয়, তাহলে সরকার পরিবর্তন হলেও একইভাবে চলতে থাকবে। তাই সম্প্রতি ডাকসু ভবনে হামলার ঘটনায় জড়িতদের যেনো বিচার হয় সে দাবি করেন তিনি।

সরকারের ইশারায় এসব হামলা হচ্ছে উল্লেখ করে ভিপি নুর বলেন, অতীতেও ঢাবির হলগুলোতে বেশ কয়েকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কোনটিরই বিচার হয়নি।

উল্লেখ্য, গত ২২ ডিসেম্বর দুপুরে ডাকসু ভবনে ভিপি নরুল হক নুর ও তার সহযোগীদের ওপর হামলা চালায় মুক্তিযদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা। কক্ষের লাইট নিভিয়ে লাঠিসোটা দিয়ে চালানো এই হামলায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৪ জন নেতাকর্মী গুরুতরভাবে আহত হন। পরে আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় গত ২৪ ডিসেম্বর ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ ৩৭ জনের নামে বাদী হয়ে একটি মামলার দায়ের করেন ভিপি নুর। ঢামেকে চিকিৎসাধীন থাকায় তার পক্ষে শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন নিয়ে যান ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেন।

অপরদিকে ডাকসু ভবনে হামলার ঘটনায় ভিপি নুরের বিরুদ্ধে চুরি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে গত ২৬ ডিসেম্বর রাতে একটি মামলা দয়ের করেন ঢাবি শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ছাত্র ডিএম সাব্বির হোসেন। রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের করা ওই মামলায় নুরসহ ২৯ জনকে আসামি করা হয়।