ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রেই বিমান বিধ্বস্ত, দাবি ট্রুডোর

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রেই ইউক্রেনের বোয়িং বিমানটি ভূপাতিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তবে অনিচ্ছাকৃতভাবেই এ ঘটনা ঘটেছে বলেই তার ধারণা। তেহরানে ইউক্রেনের বিমানটি বিধ্বস্তের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক টাইমস ও সিএনএন।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তাদের এবং মিত্র গোয়েন্দা সংস্থার সমস্ত প্রমাণ ইঙ্গিত দেয়, ইরানের একটি সারফেস টু এয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে এটি ‘অনিচ্ছাকৃত’ হয়ে থাকতে পারে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়ান্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছিলো ইরানের অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেনের ওই যাত্রীবাহী বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও একই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস ও সিএনএন এর প্রকাশিত ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পারান্দের রাতের আকাশে একটি ক্ষেপণাস্ত্র কোনো একটি বস্তুকে আঘাত হেনেছে। আলোর ঝলকানি দেখা যাবার বেশ কয়েক সেঙ্কেন্ড পর বিকট শব্দ শোনা যায়। ওই সময় ক্ষেপনাস্ত্রটি বিমানে আঘাত হানে বলে দাবি করেছে অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম বেলিংক্যাট।

তারা আরো জানায়, ওই সময়ের পরপরই বিমানটির সাথে সকল প্রকারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ভোরে ইরাকের রাজধানী বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন বিমান হামলায় ইরানের এলিট কুদস বাহিনীর প্রধান কমান্ডার কাসেম সোলায়মানি নিহতের মাত্র চার দিন পর গত বুধবার ভোররাতে ইরাকে অবস্থিত দুটি মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। ওই ঘটনায় ৮০ জন মার্কিন সেনা নিহত এবং আরো ২০০ জন আহত হওয়ার খবর জানায়া ইরানি গণমাধ্যমগুলো।

এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর তেহরান বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের মাত্র তিন মিনিটের মাথায় ইউক্রেনের ওই বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ক্রুসহ ১৭৬ যাত্রীর সবাই নিহত হন।

আলজাজিরার যুদ্ধবিষয়ক সংবাদদাতা ও বিশ্লেষক অ্যালেন ফিশার বলেন, মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলার মাত্র চার ঘন্টা পর ওই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এমনটা হতে পারে তখনও ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু ছিলো, বা ভুলক্রমে বন্ধ করা হয়নি। যার ফলে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে।

দুর্ঘটনার পরপর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানান, দুর্ঘটনায় বিমানের সব আরোহী নিহত হয়েছেন এবং এর মধ্যে ৬৩ জন কানাডার নাগরিক ছিলেন।

দুর্ঘটনার তদন্তের কাজে ইরানকে সকল প্রকার সহযোগিতা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে তার দেশ।

তবে ইরানি কর্মকর্তারা সন্দেহ প্রকাশ করছেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ওই বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে। প্রাথমিকভাবে বিমানের ব্ল্যাকবক্স বোয়িং এর হাতে হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানালেও নতুন করে বোইয়িং, কানাডা এবং ইউক্রেনকে নিয়ে তদন্তের চিন্তা করছে তেহরানের বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ।

প্রাথমিকভাবে ইউক্রেন এ বিষয়ে সহমত প্রকাশ করলেও পরবর্তীতে তারা তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে কোনো কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।