ইউপি নির্বাচন: দ্বিতীয় দফা ভোটে নিহত ৬

সারাদেশে ব্যাপক অনিয়ম ও সহিংসতার মধ্য দিয়ে শেষ হলো দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় দফাতেও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। রাজধানী ঢাকায় ও যশোরে দু’জন এবং চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে তিনজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া জামালপুরে সংঘর্ষের সময় একজনের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

দেশের ৬৩৯টি ইউনিয়নে একযোগে সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকাল চারটায় শুরু হয়। দ্বিতীয় ধাপের এই চলমান নির্বাচনে ৭৯টি ইউনিয়নে কোনো প্রার্থী দেয়নি বিএনপি। এছাড়া বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না এই শঙ্কায় অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাঁদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

দ্বিতীয় ধাপের এই নির্বাচনে ২ হাজার ৬৬২ জন চেয়ারম্যান পদে, ২১ হাজার ২৫৯ জন মেম্বার পদে, ৬ হাজার ৪৯৮ জন সংরক্ষিত নারী পদে প্রার্থী ছিলেন।

এর আগে নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে গত ২২ জানুয়ারি ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যু হয়। শুধু নির্বাচনের দিনই নিহত হয়েছে ১১ জন।

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ভোট গ্রহণকালে চরবাউড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে দুই পক্ষের মাঝে গোলাগুলিতে তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। নিহতদের নাম কামাল, সাঈফুদ্দিন, ইব্রাহীম। এ সময় একজন পুলিশ কনস্টেবলও গুলিবিদ্ধ হন।

রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হলে ১০ বছরের এক শিশু নিহত হয়। হযরতপুর ইউনিয়নের মধুরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে প্রশাসন।

যশোরে পুলিশের সাথে এক প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় এক ফেরিওয়ালা নিহত হয়েছেন। নিহত ফেরিওয়ালার নাম আবদুস সাত্তার বিশে। ঘটনার পর ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করতে বাধ্য হয় নির্বাচন কমিশন।

একই জেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের একটি কেন্দ্রে একজন যুবলীগ কর্মী গুলিতে আহত হয়েছেন। তাঁর পেট ও পিঠে কয়েক রাউন্ড গুলি লেগেছে বলে জানিয়েছেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

এদিকে জামালপুরের মেলান্দহের শ্যামপুর ইউনিয়নের বালুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সংঘর্ষের সময় রফিকুল ইসলাম (৪০) নামে একজন ব্যক্তি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু বরণ করেন।

এছাড়া মাদারীপুরে সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৮ জন আহত হয়েছেন। ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ভোটকেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে এনটিভি ও দৈনিক মানবকণ্ঠের প্রতিনিধি দু’জন গুলিবিদ্ধ হন। কুমিল্লার বরুড়ায় ২১টি ককটেলসহ একজন আওয়ামি লীগ নেতার ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এদিকে ভোট গ্রহণের সময় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় যশোর সদরের চারটি ইউনিয়নের ছয়টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। এ সময় দুজন প্রিসাইডিং অফিসার ও দুজন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারসহ পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

অনিয়ম ও প্রাণহানির মধ্য দিয়ে শেষ হলো ভোট গ্রহণ

ভোটের গোলাগুলিতে প্রাণ গেল শিশুর

কুমিল্লায় বিস্ফোরক দ্রব্যসহ আ.লীগ প্রার্থীর ছেলে আটক

চলছে দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ