যে দৃশ্য হার মানায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে

হার-জিত খেলারই অংশ। প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কখনো কখনো মাঠে এমন কিছু ঘটনা ঘটে, যা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঊর্ধ্বে। হার মানায় লড়াইয়ের মানসিকতাকে। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বেনোনিতে তেমনই এক ‍হৃদয়স্পর্শী ঘটনা ঘটল। কেন নিউজিল্যান্ড অন্যদের চেয়ে আলাদা সেটাও আরেকবার দেখল ক্রিকেট দুনিয়া।

গতকাল যুব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের ৪৩তম ওভারের ঘটনা সেটা। স্বপ্নের সেঞ্চুরির নিঃশ্বাস দূরত্বে চলে এসেছিলেন কির্ক ম্যাকেঞ্জি। একটা সিঙ্গেল নিলেই ব্যক্তিগত সংগ্রহে তিন অংক ছুঁয়ে ফেলতে পারতেন তিনি। কিন্তু তা হয়নি।

মাংসপেশীতে টান লাগায় বাইশ গজ ছাড়তে হয় ম্যাকেঞ্জিকে। সাজঘরে প্রাথমিক চিকিৎসা ও বিশ্রাম নিয়ে ইনিংসের শেষ দিকে ফিরে আসেন অসুস্থ ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান। কিন্তু ভাগ্য সবসময় সহায় হয় না। দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়ল না ম্যাকেঞ্জিরও। দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে এসে প্রথম বলেই আউট হন তিনি; কাঁটা পড়েন ৯৯ রানে!

এরপর যা ঘটল তা ছিল ভাবনারও বাইরে। শারীরীক এবং মানসিক দুদিক দিয়েই ভেঙে পড়েন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান। অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে ঠিক মতো দাঁড়াতেই পারছিলেন না ম্যাকেঞ্জি। সাধারণত এ ধরনের ঘটনায় সতীর্থ কিংবা কোচিং স্টাফদের সহায়তা নিয়ে ক্রিকেটাররা মাঠ ছাড়েন।

যদিও বেনেনিতে দেখা গেল বিরল এক ‍দৃশ্য। প্রতিপক্ষ ক্রিকেটারদের কাঁধে চড়ে মাঠ ছেড়েছেন ম্যাকেঞ্জি। তাকে বহনকারী দুই ক্রিকেটার হলেন নিউজিল্যান্ডের দুই তরুণ- জেসে তাশকফ ও জোসেফ ফিল্ড। এমন ‍দৃশ্য গ্যালারির দর্শকদের পৌঁছে দিয়েছে আবেগের চূড়ান্ত সীমায়।

যুব বিশ্বকাপের মঞ্চ থেকে ক্রিকেট বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে। কিউই ক্রিকেটারদের এমন উদারতায় মুগ্ধ দর্শকরা। গ্যালারি থেকে ভেসে আসে মুহুর্মুুহু করতালির আওয়াজ। তাতে আবাগে ভাসল ক্রিকেট দুনিয়া। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটারদের ধন্যবাদ জানিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড।