আপনি পড়ছেন

চীনের উহানে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস দেশটিতে তাণ্ডব চালিয়েছে। অথচ চীনের সঙ্গে ১৪টি বর্ডার (সীমান্ত) পয়েন্ট থাকা হংকংয়ে প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সেই অর্থে কোনো প্রভাব পড়েনি। এমনকি চীনের প্রথম (২৩ জানুয়ারি) করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়া যায় এই হংকংয়েই। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী হংকংয়ে ১২২ জন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছে। আর মারা গেছে তিনজন।

corona hongkong control

কিন্তু চীনের সাথে লাগোয়া এই স্বায়ত্ত্বশাসিত অঞ্চলটির পক্ষে কীভাবে সম্ভব হলো ভয়ংকর এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা?

বিষয়টি নিয়ে বিবিসি বাংলার সাথে কথা বলেছেন বাংলাদেশি প্রকৌশলী মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান। তিনি সাত বছর ধরে হংকংয়ে বসবাস করছেন।

মুনিরুজ্জামান মনে করেন, এক্ষেত্রে হংকং পূর্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অনেকটাই সফল হয়েছে। কারণ ২০০৩ সালের সার্স ভাইরাসের সংক্রমণে চীনের পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল হংকংয়ের। ওই সময় দেশটিতে প্রায় তিন শ লোকের মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশি এই প্রবাসী বলছেন, এর পাশাপাশি হংকংয়ের সাধারণ মানুষ ব্যক্তিগত সচেতনতা মেনে চলার ব্যাপারে ব্যাপক সচেতন। সেখানকার প্রায় শতভাগ মানুষ মুখে মাস্ক ব্যবহার করছেন। তারা স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ঠিক রেখেও চেষ্টা করছেন ভিড় ও জনসমাগম এড়িয়ে চলার। সাধারণ সর্দি-জ্বর হলেও তারা কর্মক্ষেত্রে যাচ্ছেন না।

অন্যদিকে, জনগণের পাশাপাশি হংকং সরকারও সচেতন। ফলে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে নানা সচেতনতামূলক কার্যক্রম নিয়েছে দেশটির সরকার।

সচেতনতার অংশ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি ভবনের সামনে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। তারা সেখানে সকলের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করছেন। সেইসঙ্গে মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না।

পাশাপাশি সব ভবনের গেটে রাখা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। যাতে ভবনে প্রবেশ করার আগে সবাই তাদের হাত ধুয়ে নিতে পারে। সেইসঙ্গে ভবনের গেটে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানো সংক্রান্ত যাবতীয় নির্দেশনা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কিন্তু হংকংয়ের জনগণ ও সরকার কবে থেকে এসব পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করলো- এমন প্রশ্নের জবাবে ওই বাংলাদেশি প্রকৌশলী জানান, দেশটিতে যেসব সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগেই নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ চীনের চীনের উহানে যখন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় তখন থেকেই হংকংয়ে উল্লিখিত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। 

তবে মুনিরুজ্জামান বলছেন, জনগণের চাপেই সরকার পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে বলে মনে করা যেতে পারে। কারণ জানুয়ারির শুরুতেই হংকংয়ের মেডিকেল সংশ্লিষ্ট পেশায় কর্মরতরা ধর্মঘটে যায়। এ সময় তারা চীনের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করার দাবি জানান। এর পরই হংকং সরকার কিছু কিছু পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করে।

চীনের সঙ্গে হংকংয়ের ১৪টি বর্ডার পয়েন্টের মাত্র চারটি এখন খোলা আছে। তবে চীন থেকে কেউ হংকংয়ে প্রবেশ করলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক। তাছাড়া কোয়ারেন্টাইন ঠিকমতো হচ্ছে কিনা সেটাও নিয়মিত মনিটর করছে প্রশাসন।

এ ছাড়া সরকারিভাবে ব্যবস্থা করা এবং হোম কোয়ারেন্টাইনের ব্যাপারেও নিয়মিত খোঁজখবর রাখছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে, জানুয়ারির শুরু থেকেই সব পাবলিক লাইব্রেরি, পাবলিক জিমনেসিয়াম বন্ধ এবং স্কুল, কলেজ, ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ এ সংক্রান্ত সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

বিবিসি বলছে, করোনার বিস্তার ঠেকাতে সরকারি অফিসগুলোতে কাজের পরিধি কমিয়ে দেয়া হয়েছে। আর যেসব অফিসে সম্ভব সেসব অফিসে কর্মীদের ঘরে থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। সরকারের এসব পদক্ষেপের কারণে দেশটির ব্যবসা-বাণিজ্য তথা সামগ্রিক অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।

তবে সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে হংকং সরকার প্রণোদনা দিচ্ছে। ১৮ বছর থেকে বেশি বয়সী ব্যক্তিদের প্রত্যেককে ১০ হাজার হংকং ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় এক লাখ টাকা) করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.