লকডাউনে শত শত বিবাহ বিচ্ছেদের শঙ্কা!

বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে ভয়াল থাবা বসিয়েছে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। প্রতিদিনই লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জারি করা হয়েছে লকডাউন। ক্রমশই জটিল হচ্ছে পরিস্থিতি। কবে ফের আপন ছন্দে ফিরবে বিশ্ব- জানা নেই কারো।

বিবাহ বিচ্ছেদ- প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ২৫ মার্চ থেকে দেশজুড়ে ২১ দিনের লকডাউন জারি করে ভারত। আগামী ১৪ এপ্রিল তা শেষ হওয়ার কথা। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় এই লকডাউনের মেয়াদ আরো বাড়ানো হতে পারে বলে ইতোমধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। লকডাউনের ফলে দেশটির প্রায় প্রতিটি মানুষই ঘরবন্দি। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে সাংসারিক মনমালিন্য। আগের তুলনায় বেড়েছে নারীর প্রতি নির্যতন। বেড়েছে বিবাহ বিচ্ছেদের প্রবণতা।

সম্প্রতি দেশটিতে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করান এমন আইনজীবীদের কাছে প্রতিদিন বিবাহ বিচ্ছেদ করার জন্য ফোন করছেন অনেক দম্পতি। এর মধ্যে অনেকের দাম্পত্য জীবন দশ বছর পেরিয়ে গেছে। অনেক দম্পতিই তাদের আইনজীবীকে বলছেন, পারিবারিক অশাস্তির কারণে স্বেচ্ছায় যৌথ বিচ্ছেদ চাইছেন তারা।

কারণ হিসেবে দেখা যায়, লকডাউনে কর্মজীবী নারী-পুরুষ একসাথে বাড়িতে থাকলেও সংসারের যাবতীয় চাপ পড়ছে শুধু নারীদের ওপর। এমনকি ঘরের কাজ করার পাশাপাশি ঘরে বসেই অফিসের টুকটাক কাজ সারতে হচ্ছে তাদের। এ ছাড়া টানা এত সময় ঘরে কাটাতে অভ্যস্ত নন দম্পত্তিরা। দীর্ঘ সময় একসাথে থাকার কারণে বাড়ছে সাংসারিক ঝগড়া।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় ২১ দিনের লকডাউন চলছে ভারতে- ছবি সংগৃহীত

এ ছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে অনেক বেসকারি প্রতিষ্ঠানে সৃষ্টি হয়েছে অর্থনৈতিক মন্দা। ফলে কর্মীদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করছে সেসব প্রতিষ্ঠান। অনেক প্রতিষ্ঠান আবার কর্মীদের মাসিক বেতন কমিয়ে দিয়েছে। অনেকে আবার একেবারেই বেতন দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। সংসারে অর্থনৈতিক চাপ বাড়ার কারণে অনেক দম্পতি তা মানিয়ে নিতে পারছেন না। তাই পারিবারিকগুলোতে সৃষ্টি হচ্ছে অশান্তি।

এমন পরিস্থিতিতে অনেকই দাম্পত্য জীবনের ইতি টানতে চাচ্ছেন। ফোন করছেন আইনজীবীদের। তবে আইনজীবীরা এসব দম্পতিদের মাথা ঠাণ্ডা করে বসে আলোচনা করতে বলছেন। এ ছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত মামলা নেবেন না বলেও জানিয়েছেন তারা।