কঠোর অবস্থানে আওয়ামী লীগ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাধারণ ছুটির পাশাপাশি যাবতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রয়েছে। চলছে গণপরিবহন, বন্ধ রয়েছে কলকারখানা। নিষিদ্ধ রয়েছে সব ধরনের গণজমায়েত। এই অবস্থায় খুব সমস্যায় পড়েছেন দেশে দরিদ্র শ্রেণি তথা খেটে খাওয়া মানুষ। আর এসব মানুষের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে লাখ লাখ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লোগো

কিন্তু গত কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে গরিব মানুষের এসব চাল নিয়ে দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হয়েছে। গুদাম এমনকি ঘরের মেঝে খুঁড়ে চালের বস্তা উদ্ধার করা হয়। এসব দুর্নীত ও আত্মসাতের সঙ্গে জড়িতদের অনেকেই ক্ষমতাসীন দলের লোক বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এই অবস্থায় দলটির হাইকমান্ড বিব্রতবোধ করেছে বলে জানা গেছে।

পরিস্থিতি মোকাবেলায় জড়িতদের দল থেকে বহিষ্কার এবং আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নিদের্শেই এই সিদ্ধান্ত তৃণমূল নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে ক্ষমতাসীন আওয়ামীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান বলেন, করোনার মতো এ ধরনের একটি দুর্যোগের মধ্যেও যারা এসব ঘটাচ্ছে তাদের কীভাবে ধিক্কার জানাব ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।

তিনি বলেন, ন্যাক্কারজনক এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে প্রথমে সাংগঠনিক ব্যবস্থা হিসেবে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হচ্ছে। এর পর স্থানীয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে।

আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা বলেন, দেশের এই মহাদুর্যোগে বাস্তবসম্মত ও সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার প্রধান হিসেবে তিনি জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু দুই-চার জনের কারণে সরকারের ভালো কাজগুলো নষ্ট হতে দেওয়া যায় না।

তবে চাল চুরির হাতে গোনা কয়েকটি ঘটনাকে বড় করে দেখানো হচ্ছে বলে মনে করেন আবদুর রহমান।

তার মতে, ক্ষমতাসীন দল ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি মহল এই সামান্য কয়েকটি ঘটনা সামনে আনছে। কিন্তু সরকার জনগণের কল্যাণে যেসব ভালো ও কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলো নিয়ে কোনো আলোচনা হচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, এর আগে ত্রাণ বিতরণে কোনো ধরনের অনিয়ম সহ্য করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গরিব মানুষের ত্রাণ নিয়ে যারা নয় ছয় করবে তাদের ছাড় দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, জাতির দুর্যোগের মধ্যেও অসহায় মানুষের ত্রাণ যারা আত্মসাৎ করে তারা মানুষরূপী জানোয়ার।

কিন্তু এত কিছুর পরও যেন ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতির ঘটনা থামছিলই না। প্রতিদিনই একাধিক ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ হতে থাকে। এ অবস্থায় সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভেতরে অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি হয়। এমনই অবস্থায় দলীয় নেতার নির্দেশে ত্রাণ দুর্নীতিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দিলো আওয়ামী লীগ।