প্রধানমন্ত্রী: বাংলাদেশের মানুষের তো এমন অমানবিক হওয়ার কথা না

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হলে অনেক সময় অমানুষে পরিণত হয়। কিন্তু যখন দেখি মায়ের একটু সর্দি-কাশি ও জ্বর হলে ছেলে, ছেলের বউ এমনকি তার স্বামী পর্যন্ত তাকে জঙ্গলে ফেলে আসে। এমন অমানবিক কাজ আর হতে পারে না। বাংলাদেশের মানুষের তো এ রকম হওয়ার কথা না।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকা‌রি বাস ভবন গণভবন থেকে ভি‌ডিও কনফারেন্সে ঢাকা বিভাগের আটটি জেলার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথাগুলো বলেন। এ সময় নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি জেলাগুলোতে করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজ-খবর নেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটবে? করোনার উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করান, চিকিৎসার ব্যবস্থা নেন, এতে নিজেরাও সুরক্ষিত থাকবেন। জীবন-মৃত্যু আল্লাহর হাতে। যে কেউই মারা যেতে পারেন। তাই করোনা নিয়ে অমানবিক হওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। বরং ভাইরাসটি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

দেশব্যাপী সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক মানুষের কষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃষক, শ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষ, ছোট ব্যবসায়ী, এমনকি নিম্নবিত্তদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। তাদের জন্য প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। সবাইকে সহযোগিতা করা হবে। মানুষের কাছে যারা হাত পাততে পারেন না, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আরো ৫০ লাখ মানুষকে রেশন কার্ড দেয়া হবে।

সরকার প্রধান আরো বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বে ২৫০ কোটি মানুষ ঘরবন্দি। এটি একটি অদৃশ্য শক্তি। যার প্রভাবে সারা বিশ্ব এক জায়গায় চলে এসেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার সৃষ্টি হবে। তাই আমরা ইতোমধ্যেই ৯২ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরি করেছি।’

আসন্ন রমজান মাসে ঘরে বসে ইবাদতের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সৌদি আরবসহ মুসলিম প্রধান অনেক দেশেই ইতোমধ্যে মসজিদে তারাবির নামাজ স্থগিত করেছে। তাই দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ, আপনারাও তারাবির নামাজ ঘরে পড়ুন। এতে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি কমবে। ঘরে থাকার কারনে ইবাদত করার সুযোগ বেশি তৈরি হয়েছে।