মন্দা মোকাবেলায় তিন বছরের পরিকল্পনা

মরণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী কারফিউ, লকডাউন বা অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এক প্রকার বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ বা অন্যান্য সংস্থাগুলো বলছে, আগামীতে তীব্র মন্দা দেখা দিতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দেওয়ার অর্থ হলো বাংলাদেশে তার বেশ প্রভাব পড়বে। যে পূর্বাভাস ইতোমধ্যে দিয়েছে উল্লিখিত দুটি সংস্থা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সম্ভাব্য সেই মন্দা মোকাবেলায় তিন বছর মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার বৃহস্পতিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার শুরুতেই এ তথ্য জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এমন একটা ভাইরাস, তাও চোখে দেখা যায় না। একটা অদৃশ্য শক্তি। অথচ তারই প্রভাবে আজ বিশ্বের যা তা অবস্থা। গোটা বিশ্ব আজ এক জায়গায় চলে এসেছে। ভাইরাসটির বিরূপ প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছে, এর প্রভাবে প্রচণ্ড অর্থনৈতিক মন্দা এমনকি দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। পরিস্থিতি সেদিকে গেলে আমাদের সরকারের করণীয় আছে।’

তিনি বলেন, ‘সম্ভাব্য সেই মন্দা বা দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা অথবা দেশের মানুষকে রক্ষা করার কথা চিন্তা করে আমরা ইতোমধ্যে প্রায় এক লাখ কোটি টাকার (প্রায় ৯৩ হাজার কোটি টাকা) একটা প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরি করেছি। তার আমরা বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে। যাতে কোনো রকম মন্দা আসলে তা আমি মোকাবিলা করতে পারি। আর সেই প্যাকেজ শুধু বর্তমান সময়ের জন্যই নয়। বরং আগামী তিন অর্থবছরে আমরা কীভাবে দেশকে তথা দেশের মানুষকে অর্থনৈতিক মন্দার হাত থেকে রক্ষা করব, সেই পরিকল্পনাও কিন্তু আমরা নিচ্ছি। সেভাবে চিন্তা করেই আমরা প্রত্যেকটা কার্যক্রম হাতে নিচ্ছি। অর্থাৎ আগাম প্রস্তুতি হিসেবে কিছু কর্মসূচি নিচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হলো- সব ধরনের জনসমাগম এড়িয়ে সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। তবে কাজও করতে হবে, কাজ ছাড়া তো চলবে না। যে কাজগুলোয় খুববেশি লোকের দরকার হয় না, এবং দূরত্ব বজায় রেখে করা যায় সেই কাজগুলো করতে হবে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেশের শিল্প-কারখনা, ওষুধ বা অন্যান্য শিল্প– একটা আলোচনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টরা চালাতে পারেন। তবে এসব জায়গায় যারা কাজ করবে অবশ্যই তারা স্ব স্ব সুরক্ষার ব্যবস্থা করবেন। তাছাড়া কৃষি কাজ বন্ধ করে রাখলে চলবে না। কৃষি কাজ তো খোলা মাঠে হয়, সেখানে সূর্যের তাপ ও খোলা বাতাস থাকে- আর এটা আমাদের করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি দিতে পারে।’