আপনি পড়ছেন

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম ও মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগে আরব আমিরাতে চাকরি হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন ভারতীয় নাগরিক। ১৬ এপ্রিল সৌরভ উপাধ্যায় নামে একজন ভারতীয় ইসলাফোবিক পোস্টের কথা টুইটারে জানান আমিরাতের প্রিন্সেস হেন্দ আল কাসেমি।

anti muslim billboard in india

দ্য প্রিন্ট নামের ভারতীয় একটি সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে যে, গত সপ্তাহে সৌরভ ভারতে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণ হিসেবে তাবলিগি জামাত ও মুসলিমদের দায়ী করেন। টুইটারে সৌরভের পোস্টে তার বিরোধিতা করেন অন্য অনেকে। এক পর্যায়ে সৌরভ ঘৃণাপূর্ণ কথা বলেন।

সৌরভ দিল্লিতে আলোচিত তাবলিগ জামাতের আয়োজনকে ‘২০২০ সালের জন্য নির্মিত জিহাদ’ বলে কটুক্তি করেন। সৌরভ তাবলিগি জামাতকে উগ্র ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী দল বলেও আখ্যায়িত করে। তিনি আরো বলেন যে, মধ্যপ্রাচ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা নির্যাতনের শিকার হন, অথচ হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই দুবাই শহর গড়ে তুলেছে।

সৌরভের টুইটার প্রোফাইলটি এখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে দ্য প্রিন্ট। কিন্তু পোস্টটি আমিরাতের প্রিন্সেসের দৃষ্টি এড়ায়নি। সৌরভের পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করে তিনি লিখেছেন যে, আমিরাতে কোনো ঘৃণা ছড়ানো বা বিদ্বেষমূলক আচরণ সহ্য করা হবে না। কেউ রকম করলে তাকে জরিমানা করা হবে এবং আমিরাত ত্যাগে বাধ্য করা হবে। তিনি আরো বলেন, কারো ঘৃণা ছড়ানোর কাজ আমাদের দৃষ্টি এড়াবে না।

প্রিন্সেস আরো বলেছেন যে, আমিরাতের শাসকদের সাথে ভারতীয় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। কিন্তু এর মানে এটা নয় যে, কারো অভদ্রতা ও ঘৃণা প্রকাশকেও স্বাগতম জানাতে হবে।

প্রিন্সেসের পোস্টে অনেকে তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। অনেকে আবার সৌরভের বিগত কিছু পোস্টও সামনে এনেছেন, যেখানে তিনি ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন।

সৌরভ একাই নন, আরো কয়েকজন ভারতীয়ের বিরুদ্ধেও ইসলাম বিদ্বেষী পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ এসেছে। এর মধ্যে একজন হলেন বালা কৃষ্ণ নাক্কা। তিনি মোরো হাব ডাকা সলিউশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করতেন। তাকে ইতোমধ্যে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এই খবরটি প্রকাশ করেছে ভারতের অন্যতম প্রভাবশালী বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া।

এম্রিল সার্ভিস নামের অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন রাকেশ কিত্তুরমাথ। তাকেও তার প্রতিষ্ঠান জাতি বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে চাকরিচ্যুত করেছে। গালফ নিউজের বরাত দিয়ে সংবাদটি প্রকাশ করেছে ভারতীয় মিডিয়া দ্য হিন্দু।

২০১৫ সালে আমিরাত একটি নতুন আইন পাশ করে। ওই আইনটির মূল উদ্দেশ্য হলো আমিরাতে ধর্ম ও জাতি বিদ্বেষ রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সেই আইনের অধীনেই আরো কয়েকজন ভারতীয় ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানোর দায়ে দেশটিতে চাকরি হারিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার জন্য মুসলিমদের দায়ী করা হচ্ছে। এর মূল কারণ হলো দিল্লিতে গত মাসে তাবলিগি জামাতের একটি আয়োজন ছিলো। সেখানে কয়েক হাজার মুসুল্লি অংশগ্রহণ করেন। অথচ ওই সময় সেখানে কোনো সভা-সমাবেশ করা নিষিদ্ধ ছিলো না। এমন কি তখনও ভারতে লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি। তারপরও বেশ কয়েকটি ভারতীয় মিডিয়া মুসলিমদের দায়ী করে সংবাদ প্রকাশ করেছে।

অবশ্য বেশির ভাগ ভারতীয় মিডিয়াতে এই ধরনের পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলা হয়েছে, একই সময়ে হিন্দু ধর্মীয় একাধিক বড় বড় আয়োজনও ছিলো। যেখানে দিল্লির তুলনায় অনেক বেশি লোক সমাগম হয়েছিলো। এরপরও ঢালাওভাবে মুসলিমদের দায়ী করার সমালোচনা করা হয়েছে।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.