করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে কর্ম হারিয়েছেন দুই কোটি

মরণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে রেকর্ড ৪ হাজার ৫৯১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে! করোনার এই ভয়াল থাবা পড়েছে মার্কিন অর্থনীতিতেও। প্রতি সাত জনের এক জন শ্রমিক যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কাজ হারাচ্ছেন বলা জানিয়েছে ডয়চে ভেলে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

দেশটিতে মহামারি রূপ ধারণ করা করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ৬৪১ জন। আক্রান্তের সংখ্যা সাত লাখের কাছাকাছি। সঙ্কটাপন্ন এই পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে পড়েছে চাকরি হারানোর হিড়িক। বিভিন্ন গণমাধ্যমের দাবি, এই মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর এক কোটির ওপর মানুষ চাকরিচ্যুত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই সংখ্যা দুই কোটিতে গিয়ে ঠেকেছে বলে জানা গেছে।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে বলছে, লকডাউন অব্যাহত থাকলে যুক্তরাষ্ট্রে চাকরিচ্যুতের সংখ্যা আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হলেও মার্কিন অর্থিনীতিকে স্বাভাবিক করতে হবে। তা না হলে আমাদের এই অর্থনীতিকে বাঁচানো যাবে না। যেই হারে মানুষ কর্মচ্যুত হচ্ছেন তা আমাদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

লকডাউনে ফাঁকা নিউইয়র্কের রাস্তা

বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৯৩২-৩৩ সালে মহামন্দার পরও এত সংখ্যক মার্কিনির চাকরি হারানোর ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি সম্পর্কে মার্কিন প্রশাসনও বেশ অবগত আছে। তারা ভালো করেই জানে, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে অর্থনীতি আরও সংকটজনক জায়গায় পৌঁছে যাবে। সেই কথা মাথায় রেখ বৃহস্পতিবারের ঘোষণায় ট্রাম্প মানুষকে স্বাভাবিক জীবনযাত্রার পথ খুঁজে বের করতে বলেছেন।

ট্রাম্প বলেন, আমাদের এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই ও অর্থনৈতিক ক্ষতি থেকে বাঁচতে তিনটি ধাপে এগোতে হবে। প্রথমত, যেসব স্থানে করোনার প্রকোপ কমেছে বা আগে থেকেই কম সেসব স্থানে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু দোকান, স্কুল ইত্যাদি খোলা হবে। ১৪ দিন খুলে রাখার পর আমরা দেখবো ভাইরাসের সংক্রমণ কমেছে নাকি বেড়েছে।

তিনি বলেন, যদি সংক্রমণ না বাড়ে তাহলে দ্বিতীয় ধাপে আমরা আরো কিছু প্রতিষ্ঠান খুলবো এবং একইভাবে নজরদারি করবো। আমরা গভর্নরদের সঙ্গে আলাপ করে এ সিদ্ধান্ত নিবো যে কোন এলাকা খোলা হবে।

করোনাভাইরাসের কারণে গোটা বিশ্বই এক অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন হতে যাচ্ছে। দেশগুলো সেই যুদ্ধ মোকাবেলায় ইতোমধ্যে নিচ্ছে নানা পদক্ষেপ। লকডাউন উঠিয়ে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জনজীবন স্বাভাবিক করার চেষ্টায় আছেন তারা।