ভারতের নিউইয়র্ক হতে যাচ্ছে মুম্বাই

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বের অনেক দেশই এখন মৃত্যুপুরী। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, চীন, ইরান, জার্মানিসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশ। এর মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরেই এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৬৮ হাজার লোক ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় ২১ হাজার মানুষ।

স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন চিকিৎসক-নার্সরা

এবার ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত মুম্বাইকে নিয়েও এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আসন্ন মে মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে নিউইয়র্কের মতো মৃত্যুপুরীতে পরিণত হতে পারে মুম্বাই। ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।

সেখানে বলা হয়, গত একদিনের ব্যবধানে শুধু মুম্বাইয়ে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে রেকর্ড ৫২২ জন। এ নিয়ে সেখানে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৪ হাজার ২৫ জন। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত ১৬৭ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন সেখানে। যা পুরো ভারতের অন্যান্য শহরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি। তাছাড়া এই সংখ্যাটা প্রতিদিনই কয়েকগুণ করে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মুম্বাইকে বিশ্বের অন্যতম ঘিঞ্জি শহরও বলা হয়ে থাকে। এখানেই এশিয়ার সবচেয়ে বড় বস্তি ধারাভির অবস্থান। শুধু বস্তিটিতেই ইতোমধ্যে ২১৪ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। আর এখানে প্রায় আট লাখ লোক বসবাস করেন। ঘনবসতি হওয়ায় বস্তিটিতে ভাইরাসের দ্রুত সংক্রমণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই মহারাষ্ট্র সরকারের সবচেয়ে দুশ্চিন্তার কারণ এটিই।

লকডাউনের মধ্যেও ধারাভি বস্তির পরিস্থিতি

আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে শুধু মুম্বাইয়ে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। আর পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে সেই সংখ্যাটা বেড়ে ছয় লাখে দাঁড়াবে। এমনটা হলে তখন চার লাখ ৮৩ হাজার আইসোলেশন বেড, ১৪ হাজার ভেন্টিলেটর ও প্রায় ২৮ হাজার আইসিইউ বেড লাগবে। কিন্তু সরকারের হাতে তার কিছুই নেই।

এই আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না মহারাষ্ট্র সরকারও। তারা বলছে, গত চারদিন ধরে মুম্বাইয়ে সংক্রমণের সংখ্যা দ্বিগুণ হারে বাড়ছে। তাই বাড়তি সতর্কতা হিসেবে হাসপাতালগুলোতে আইসোলেশন ও আইসিইউ বেডের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ভেন্টিলেটর ও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বস্তিতে সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।