রহস্যের আরেক নাম কিম জং উন

উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উন যেন রহস্যের আরেক নাম। গত কয়েক সপ্তাহে জনসম্মুখের আড়ালে গিয়ে বিশ্বব্যাপী নিজের মৃত্যু নিয়ে তৈরি করলেন এক রহস্যের। মাত্র ৩৬ বছর বয়সী এই স্বৈরস্বাশক ইতোমধ্যে জন্ম দিয়েছেন বেশ কিছু রহস্যের।

২০১১ সালে তার পিতা ও দেশটির সাবেক শাসক কিম জং ইলের মৃত্যুর পর স্বৈরশাসক হিসাবেই দেশের শাসনকার্যে নিজেকে নিযুক্ত করেন তিনি। বাবা ও দাদার মতোই উত্তর কোরিয়ার জনগণ কিমের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কিছু জানে না। তবে তাকে নিয়ে অনেক গুঞ্জন আছে মানুষের মুখে মুখে, যা রূপকথার মতোই। যার বাস্তব প্রমাণ কেউ পায়নি।

শোনা যায়, ছদ্মবেশ নিয়ে কিম সাত-আট বছর ধরে সুইজারল্যান্ডে পড়াশোনা করেছেন। সে সময় নিজেকে দেশটিতে থাকা উত্তর কোরীয় দূতাবাসের এক কর্মীর চালকের ছেলে হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। এরপর ফিরে আসেন নিজ দেশে। পরে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের কিম ইল সুং মিলিটারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে উচ্চতর শিক্ষা লাভ করেন।

ক্ষমতা গ্রহণের পরই উত্তর কোরিয়ায় অভূতপূর্ব পরিবর্তন এনেছেন তিনি। নিজের সমন্ধে বেশ বড়সড় প্রচার করতে শুরু করেন। গোটা বিশ্বের কাছে গ্রেট সাকসেসর এবং আউটস্ট্যান্ডিং লিডার হিসেবেই উত্তর কোরিয়ার গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করতে শুরু করে। তারা এমনভাবে কিমকে উপস্থাপন করেছে যেন তিনি স্বর্গ থেকে নেমে আসা এক আশীর্বাদ।

পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে উত্তর কোরিয়া সব সময়ই সমালোচনায় ছিল। কিম ক্ষমতায় আসার পর দেশটি যেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। পারমাণবিক পরীক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত নানা বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলের বহু সমালোচনায় দেশটিকে পড়তে হয়েছে। তবে কিম পিছপা হননি। তার বাবার মতোই একগুঁয়েমি নীতি অনুসরণ করে চলেছেন।

গুঞ্জন আছে, কিম বিভিন্ন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তারা বাবা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন এমন তিন জনকে হত্যা করেছেন বলে আলোচনা আছে। সেইসঙ্গে ৭ জন জেনারেলকে পদ থেকে বহিষ্কার করেন তিনি। বেশ কয়েকজনকে হত্যা করা হয় বলেও খবর রটে।

উত্তর কোরিয়ার জনগণের মতে, সব সময় ক্ষমতার অহংকার করেন কিম জং উন। এতই অহংকার করেন যে, তার ঘনিষ্ঠ নেতা ও বান্ধবীকেও হত্যা করতে দ্বিধা করেননি।

সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, যখনই কিমকে নিয়ে দেশে কোনো বিতর্কের তৈরি হয় তখনই লাপাত্তা হয়ে যান তিনি। এর আগে ২০১৪ সালে তিনি টানা ৪০ দিন গায়েব ছিলেন। সম্প্রতি যে ২০ দিন নিরুদ্দেশ ছিলেন সেটা কারোই অজানা নেই। গোটা বিশ্বে প্রচার হয়েছে তিনি মারা গেছেন। অথচ সবাইকে অবাক করে জনসম্মুখে হাজির হয়েছে রহস্যময় এই নেতা।