বানরগুলোর ওপর এ কেমন নিষ্ঠুরতা!

মাদারীপুরে দুর্বৃত্তদের দেওয়া বিষ খেয়ে মারা গেছে ১০টি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির বানর। এ ছাড়া একটি বানরকে অর্ধমৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার বিকেলে মাদারীপুর পৌরসভার চরমুগুরিয়ার মধ্যখাদ্দি এলাকায় এ নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটে।

মাদারীপুর পৌরসভার চরমুগুরিয়ার মধ্যখাদ্দি এলাকায় বিষ খেয়ে মারা যাওয়া বানর

স্থানীয়রা জানান, শত বছর ধরে এ এলাকায় মানুষের পাশাপাশি বানরগুলো বসবাস করে আসছে। তার প্রতিবেশীর মতোই থাকে। মাঝে মাঝে খাদ্য সংকটের কারণে মানুষের বাসা-বাড়িতে হানা দিলেও কেউ কখনো তাদের মারেনি। তবে গতকাল মঙ্গলবার দুর্বৃত্তদের নিষ্ঠুরতার বলি হয় ১১টি বানর। তাদের প্রয়োগ করা বিষ খেয়ে মারা যায় ১০টি বানর এবং একটিকে অর্ধমৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে স্থানীয়রাই মৃত বানরগুলোকে মাটিচাপা দিয়ে দেয়।

সাকিব নামের এক স্থানীয় যুবক জানান, মৃত বানরগুলো ছাড়াও আরো কিছু বানরের পেটের দিকে নীল হয়ে থাকতে দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই বানরগুলোও বিষ খেয়ে থাকতে পারে। কে বা কারা এ নিষ্ঠুর ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত করে দেখছে।

মাদারীপুর পৌরসভার চরমুগুরিয়ার মধ্যখাদ্দি এলাকায় বিষ খেয়ে মারা যাওয়া বানর

মাদারীপুর পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, ১১টি বানর বিষ খেয়ে মারা গেছে। এ ঘটনায় মাদারীপুর জেলা প্রশাসক বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন।

এ বিষয়ে মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মাসুদ পারভেজ বলেন, বানরগুলো এই এলাকার ঐতিহ্য। শত বছর ধরে তারা মানুষের প্রতিবেশীর মতোই এখানে বাস করছে। যারা বানরগুলোকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেছে তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।

মাদারীপুর পৌরসভার চরমুগুরিয়ার মধ্যখাদ্দি এলাকায় বিষ খেয়ে মারা যাওয়া বানর

জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের আগে এই এলাকায় ১০ হাজারের মতো বানর ছিল। ফলজ ও বনজ গাছে ভর্তি এলাকার সর্বত্র বানরের বিচরণ ছিল। তবে বর্তমানে গাছের পরিমাণ কমে যাওয়ায় বানরের সংখ্যাও অনেক হ্রাস পেয়েছে। তাদের সংরক্ষণের জন্য ইতোমধ্যে সদর উপজেলার কুমার নদের তীরে নয়াচর এলাকায় ১৮ একর জায়গাজুড়ে একটি ইকোপার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। তবে এখনো বানরগুলোকে সেখানে নেওয়া যায়নি।