করোনা পরীক্ষার ফল পেতে দেরি, ঝুঁকিতে দেশ

দেশে মরণব্যাধী করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হচ্ছেন। এক্ষেত্রে অনেক রোগীর উপসর্গ প্রকাশ পাচ্ছে না। ফলে তার মাধ্যমে আরো অনেকেই কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আবার অনেকের করোনা টেস্টের ফলাফল দেরিতে আসছে। এতে করে ওই সময়ের মধ্যে আরো অনেকে তার সংস্পর্শে আসছেন।

মারাত্মক ঝুঁকির সম্ভাবনা

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জ্বর, সর্দি-কাশিসহ করোনার উপসর্গ দেখা দেয়া ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়ার তিন-চারদিন পর টেস্টের ফলাফল দিচ্ছে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে ওই ব্যক্তিকে আইসোলেশন কিংবা হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে না। এতে করে তার সংস্পর্শে যারা আসছেন, তারাও ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হচ্ছেন।

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভাইরাস শনাক্তের বিষয়টি না জানলে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোশতাক হোসেন বলেন, করোনাভাইরাসের উপসর্গ যাদের মধ্যে থাকবে, তাদের সবাইকেই আক্রান্ত রোগীদের মতোই সতর্কতার সহিত সেবা দিতে হবে। মোট কথা নমুনা পরীক্ষা করতে দেয়ার সময় থেকে ফলাফল আসার আগ পর্যন্ত সন্দেহভাজন রোগীকে আইসোলেশনে রাখা উচিত।

কিন্তু বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় তা মানা হচ্ছে না। দেখা গেছে, নমুনা পরীক্ষা করতে দেয়ার পর সন্দেহভাজন রোগী যথেচ্ছভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন জমায়েতে উপস্থিত হচ্ছেন। এতে করে নিজেদের অজান্তেই ওই ব্যক্তি ভাইরাসটিকে অন্যান্য মানুষের মাঝে ছড়াচ্ছেন, যোগ করেন এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, অনেক রোগীর ক্ষেত্রে শরীরে করোনার উপস্থিতি রয়েছে কি না তা না জানা পর্যন্ত অন্য রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব হয় না। বিশেষ করে ডায়ালাইসিসের রোগীর ক্ষেত্রে এমনটা হতে পারে। করোনায় আক্রান্ত কি না তা না জেনে ডায়ালাইসিস করালে আরো অনেক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

সময়মতো টেস্টের ফলাফল না আসায় অনেকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছেন উল্লেখ করে মোশতাক হোসেন বলেন, সঠিক রোগতাত্ত্বিক অবস্থা জানার জন্য যথাসময়ে পরীক্ষার ফল জানা খুবই জরুরি। নয়তো ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।

এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনেক জায়গায় মানা হচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসকরা ল্যাবরেটরি পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন, রোগীকে হাসপাতালে ঢুকতে দিচ্ছেন না। অথচ নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালে রোগী বাছাই করার জন্য আলাদা সেন্টার থাকার কথা। সেখান থেকে রোগীর নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে এবং ফলাফল আসার আগ পর্যন্ত তাকে আইসোলেশনে রাখতে হবে।