আপনি পড়ছেন

সৌদি আরবের সঙ্গে ফিলিস্তিনের গাজাভিত্তিক রাজনৈতিক দল হামাসের মধ্যকার সব গোপন তথ্য ফাঁস হয়েছে গেছে। কাজটি করেছেন দলটির পলিটিকার ব্যুরোর সদস্য ও সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাজ্জাল। এর কারণে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দলটির সঙ্গে সৌদি রাজ পরিবার ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা সামনে চলে আসলো।

saudi king with hamas leadersবাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের সঙ্গে হামাসের নেতারা

২০১৫ সালে সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে হামাসের নেতাদের এক গোপন বৈঠকের কথাও প্রকাশ করেছেন তিনি। সেইসঙ্গে সংগঠনটিকে কে কে অনুদান দিতেন তারও একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন তিনি।

নাজ্জাল বলেন, ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে হামাসের নেতা খালেদ মিশাল সৌদি প্রিন্সের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। সেখানে সাবেক সৌদি অর্থমন্ত্রী মেহের সালাহর মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তাকে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে সৌদি বাদশাহগণ হামাসকে অর্থ অনুদান দিয়ে সাহায্য করেছেন। তাদের এসব অনুদান দিয়েই হামাসের সিংহভাগ রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে বলে জানান নাজ্জাল।

তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালে প্রয়াত সাবেক সৌদি বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ ১৩ লাখ মার্কিন ডলার দিয়েছেন সংগঠনটিকে। এরপর হামাসের নেতা শেখ আহমেদ ইয়াসিন সৌদি সফরে গেলে বর্তমান বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ তাকে ২৬ লাখ মার্কিন ডলার অনুদান দেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হামাসের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা মিডল ইস্ট মনিটরকে জানান, কারা এখানে অনুদান সরবরাহ করেন তা গোপনই রাখা হয়, হোক সে কোনো নেতা না আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা। ইতিহাসে প্রথমবার এমন হলো যে, কেউ সংগঠনটির অর্থদাতাদের নাম জনসম্মুখে আনলেন।

তিনি জানান, নামগুলো প্রকাশ পাওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে সৌদি প্রিন্স বিন সালমানের সাম্প্রতিক কার্যক্রম। তিনি রাজপরিবার ও সরকারের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আটক করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা হামাসকে অর্থ অনুদান দিয়ে সহায়তা করতেন।

people protesting in gajaসৌদিতে আটক হামাস নেতাদের মুক্তির দাবিতে গাজায় বিক্ষোভ

মিডল ইস্ট মনিটর বলছে, হামাসের সৌদি প্রতিনিধি ডক্টর মোহাম্মদ আল-খুদারিকে সম্প্রতি উগ্র সন্তাসবাদের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে সৌদি সরকার। এতে করে দুই পক্ষের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও নৈতিকতার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। হামাসের এমন পদক্ষেপ সৌদি প্রশাসনের সাম্প্রতিক আচরণ থেকে সৃষ্ট ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।

কারণ আল-খুদারি প্রায় ১৫ বছর ধরে সৌদিতে হামাসের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে আসছেন। এ সময়ে তিনি অনেকের কাছ থেকেই অনুদান সংগ্রহ করেছেন। এ ছাড়া সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সাইদ আল-ঘামদির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও ছিল তার। তাই তার গ্রেপ্তারে দুই পক্ষের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে এমনটিই মনে করছেন অনেকে।

এ কথা অস্বীকার করা যাবে না যে, হামাস অনেকটা বাধ্য হয়েই সৌদির সঙ্গে তাদের রাজনৈতিক সম্পর্কের তথ্য ফাঁস করেছে। তাদের প্রতি অনীহা, বৈষম্য এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করেছে, বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হামাসের সম্পর্ক একদম শেষ হয়ে যায়নি বলে হামাসের বেশ কিছু শীর্ষ নেতা মিডল ইস্ট মনিটরকে আশ্বস্ত করেছেন।

তারা বলছেন, আমরা নিশ্চয়তার সঙ্গেই বলছি যে, সৌদির সঙ্গে আমাদের নতুন করে সমস্যার তৈরি হয়নি। বিষয়টি এমন যে, রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। এতে কাউকে মধ্যস্থাতাও করতে হবে না।

মোহাম্মদ নাজ্জালের স্পর্শকাতর এই তথ্য ফাঁসের পর এখন পর্যন্ত সৌদি কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য আসেনি বলে উল্লেখ করেছে গণমাধ্যমটি। উল্টো গত মার্চ এবং এপ্রিলে বিভিন্ন সময়ে আটক করা হামাস নেতাদের ছেড়ে দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। সৌদির বাদশার এমন সিদ্ধান্তের বেশ প্রশংসা করেছেন মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য নেতারা।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.