চিকিৎসকদের দাবি, করোনায় কাজ করে হৃদপিণ্ডের ওষুধ

হৃদপিণ্ডের প্রদাহ কমিয়ে দেয়ার ওষুধ ফ্যামিটোডাইন মরণঘাতী করোনাভাইরাসে সংক্রমিতদের সারিয়ে তুলতে বেশ কার্যকরী মনে করছেন কিছু চিকিৎসক। নিউ ইয়র্কের কয়েকজন চিকিৎসকের গবেষণার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল-আরাবিয়া। বলা হচ্ছে এই ওষুধ ভ্যান্টিলেটর থেকেও বেশি কাজে দেয়। 

ফ্যামিটোডাইন ওষুধ

যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েল হেলথ গ্রুপ নিউ ইয়র্কে চিকিৎসাধীন এক হাজার ৫৩৬ জন রোগীর ওপর গবেষণা করেছে। সেখানে ৩৩২ জনকে ফ্যামিটোডাইন দেয়া হয়। তাদেরকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়নি।

গবেষণায় যারা অংশ নিয়েছেন তারা বলছেন, বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন। তাই ঝুঁকি এড়াতে এখনই এই পদ্ধতি ব্যবহার না করাই শ্রেয়।

তারা দাবি করছেন, ফ্যামিটোডাইনের ব্যবহারে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। ফ্যামিটোডাইন মূলত হৃদপিণ্ডের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এর ব্যবহারে হৃদপিণ্ডের জ্বালাপোড়া কমে যায়। করোনা আক্রান্ত রোগীর ওপর এই ওষুধ এর আগে ব্যবহার করা হয়নি।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষকরা বলছেন, এটি এখনো পরিষ্কার নয় যে করোনায় সংক্রমিতদের ওপর এই ওষুধের প্রভাব আসলে কতটুকু। তাই আমরা এখনই নিশ্চিত হয়ে বলতে পারছি না এটি রোগীদের সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলে।

মরণঘাতী এই ভাইরাসটির ভ্যাকসিন ও কার্যকরী কোনো ওষুধ এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। বিশ্বব্যাপী গবেষকরা দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন কার্যকর একটি ভ্যাকসিনের জন্য। কিছু গবেষণা অনেকদূর এগিয়েছেও। এর সাথে জড়িতরা বলছেন, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যেই হয়তো কাঙ্খিত ভ্যাকসিন পেয়ে যাবেন তারা।

প্রতীকী ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের বড় তিনটি ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ইনোভিও, মডার্না ও পিফিজার তাদের ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগ করেছে। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরাও তাদের তৈরিকৃত নমুনা মানবদেহে প্রয়োগ করেছে।

এসব গবেষণা বেশ অগ্রগতি পেলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল আউটব্রেক সতর্কতা এবং প্রতিক্রিয়া নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা ডেল ফিসার মনে করেন, ২০২১ সালের শেষে আসতে পারে এই ভ্যাকসিন।

তিনি বলেন, আমি মনে করি, আগামী বছরের শেষে করোনাভাইরাসের একটি ভ্যাকসিনের কথা আশা করাটা যৌক্তিক। মানুষের আকাঙ্ক্ষার সীমা একটু কমিয়া আনা উচিৎ বলে আমি মনে করি।

এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, যেসব ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা হচ্ছে তা মাত্র প্রথম ধাপে আছে। আপনাদের ভুলে গেলে চলবে না গবেষণার অনেকগুলো ধাপ আছে। প্রত্যেকটি গবেষণাকে পরবর্তী ধাপ অতিক্রম করে সফলতা পেতে হবে। এ ছাড়া একটি ভ্যাকসিন পাওয়া গেলেও এর উৎপাদন ও সরবরাহ করতে সময় প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি।