ত্রাণের সঙ্গে এবার দেওয়া হবে নগদ অর্থ

দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে অসহায় কর্মহীনদের ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। গত ২৪ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় এক কোটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল সহায়তা দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসে আরো ৫০ লাখ পরিবারকে এই খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। তবে এবার এসব সুবিধাভোগীদের প্রতিমাসে ২০ কেজি চালের পাশাপাশি নগদ অর্থও সহায়তা দেওয়া হবে।

সরকারি ত্রাণের সঙ্গে দেওয়া হবে নগদ অর্থ 

আগামী বৃহস্পতিবার থেকে এই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে তথ্য ঘাটতি এবং অসংগতি থাকায় সুবিধাভোগীদের তালিকা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। ৫০ লাখ সুবিধাভোগীর মধ্যে গতকাল দুপুর পর্যন্ত ৩৪ লাখের তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। বাকি ১৬ লাখ উপকারভোগীর তালিকা চূড়ান্তের কাজ চলছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, সরকারি ত্রাণ বিতরণে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় এবং একই ব্যক্তি একাধিকবার সহায়তা পাওয়ায় এবার সুবিধাভোগীদের নামে ডিজিটাল কার্ড তৈরি করা হচ্ছে। তাই তালিকা চূড়ান্ত করতে কিছুটা সময় লাগছে।

জানা যায়, দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সরকার প্রায় এক কোটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল সহায়তা দিয়েছে। পাশাপাশি বরাদ্দকৃত নগদ অর্থ দিয়ে তেল, ডাল, আলুও কিনে দেওয়া হয়েছে।

তবে একটি পরিবারের প্রতিমাসে একবার করে এসব ত্রাণ সুবিধা নেওয়ার কথা থাকলেও অনেকে একাধিকার সহায়তা নিয়েছেন। সরকারের অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমেও সহায়তা পেয়ে থাকেন এমন অনেকই এই ত্রাণ নিয়েছেন। ফলে সত্যিকার কর্মহীন দরিদ্র অনেকে ত্রাণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এমন অবস্থায় অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুবিধাপ্রাপ্তদের বাদ দিয়ে সাধারণ ৫০ লাখ সুবিধাভোগী পরিবারকে ডিজিটাল কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। চলতি মাস থেকে তাদের ২০ কেজি করে চাল সহয়তা দেওয়া হবে। পাশাপাশি প্রতি পরিবারকে নগদ দুই হাজার ৫০০ টাকা করে সহায়তা প্রদান করা হবে।

ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে ৯৯ লাখ ৪ হাজার ৯৭৭টি পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

এ জন্য গত রোববার পর্যন্ত ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৭ মেট্রিক টন চল বরাদ্দ করা হয়। যার মধ্যে ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৮০২ মেট্রিক টন। পাশাপাশি নগদ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৫১ কোটি ৬৯ লাখ ১৩ হাজার টাকা ইতোমধ্যে প্রায় ৩ কোটি ৬ লাখ ২ হাজার মানুষকে প্রদান করা হয়েছে।

এছাড়া ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে শিশুখাদ্য সহায়তার জন্য। এর মধ্যে উপকারভোগী প্রায় ৭ লাখ ৮৯ হাজার মানুষকে ইতোমধ্যে প্রায় ১৩ কোটি পৌনে ১০ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে।