রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যদের সুরক্ষায় যুবকের ১১ খাসি

নভেল করোনভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে এক সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে গোটা দেশ। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সমাজের বিত্তবান কেউই বাদ যাচ্ছে না সংক্রমণের হাত থেকে। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুরক্ষা কামনা করে ১১টি খাঁসি জবাই করে বিলিয়ে দিয়েছেন এক যুবক।

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনায় খাঁসি কোরবানি দেওয়া হয়। ছবি- সংগৃহীত 

গত সোমবার কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সোনাইর খামার গ্রামে এই ব্যতিক্রমী ঘটনাটি ঘটে। গ্রামের বাসিন্দা ফজলুল হকের ছেলে খাইরুল ইসলাম নিজ খরচে মহান আল্লাহর দরবারে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা কামনা করে এসব খাঁসি জবাই দেন। পরে সামাজিক দূরত্ব মেনে গরীব-অসহায়দের মাঝে এসব মাংস বিলিয়ে দেওয়া হয়।

৪০ বছর বয়সী খাইরুল ইসলাম জানান, তিনি খুবই দরিদ্র পরিবারের সন্তান ছিলেন। অভাব-অনটনের মাঝে কেটেছে তার ছোটবেলা। তার বাবার ছিল না কোনো সম্পত্তি। এমনকি তারা বসবাসও করতেন অন্যের জমিতে। ২০০৬ সালে এক প্রতিবেশীর সহযোগিতায় সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত গৃহপরিচারকের কাজ পান তিনি। তখন তার বয়স ছিল ৮ কিংবা ৯ বছর। এরপর ওই সেনা কর্মকর্তার মাধ্যমে পোস্তগোলা ক্যান্টনমেন্টের ৫আরই ব্যাটালিয়নের ইঞ্জিনিয়ার কোরের কাজ পান তিনি। এ ছাড়া কাপ্তাই, যুমনা ও নাটোরের ব্যাটালিয়নেও তিনি দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনায় খাঁসি কোরবানি দেন খাইরুল ইসলাম। ছবি- সংগৃহীত

তিনি আরো জানান, সেনাবাহিনীর কয়েকজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার সাহচার্যে এবং ভালোবাসায় তার জীবনের অনেক পরিবর্তন এসেছে। তার পরিবারের অভাব ঘুচেছে। এখন তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে-শান্তিতেই বসবাস করছেন। তাই দেশের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে মহান আল্লাহর দরবারে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ সেতুমন্ত্রী মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তার নামে ১১টি খাঁসি জবাই করে বিলিয়ে দিয়েছেন তিনি। যাতে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট এ পরিস্থিতিতে তারা সংক্রমিত না হন এবং দীর্ঘায়ু লাভ করেন।

গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, করোনাভা্ইরাসের কারণে সৃষ্ট এ পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ দেশ ও বিশ্ববাসী যেন সুরক্ষিত থাকে এবং দ্রুত সংকট কাটিয়ে উঠতে পারে তাই আল্লাহর উদ্দেশে পশু জবাই দিয়েছেন খাইরুল ইসলাম। এটি খুবই ভালো একটি উদ্যোগ। সকলের সুরক্ষার জন্য বিশেষ মোনাজাতও অনুষ্ঠিত হয়। এরপর অসহায়দের মাঝে মাংস বিতরণ করার হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুর আহম্মেদ মাছুম বলেন, খাইরুল ইসলামের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগটি সত্যিই প্রশংসনীয়। তার মতো সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসা উচিত।