ভ্যাকসিনের দাম সম্পর্কে যা জানালেন অক্সফোর্ডের গবেষক

মরণঘাতী করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন এখনো আবিষ্কার হয়নি। বিশ্বে এ বিষয়ে ১০০টিরও বেশি গবেষণা চলছে। এদের মধ্যে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা সবচেয়ে এগিয়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই গবেষণায় কাজ করা অধ্যাপক এড্রিয়ান হিল বলছেন, আমাদের পরীক্ষা সফল হলে ভ্যাকসিন সবার কাছে পৌঁছে যাবে এবং এর দাম খুব বেশি হবে না।

প্রতীকী ছবি

গালফ নিউজের বরাতে জানা যায়, ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি এস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণার কাজটি করছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপকরা। এই কার্যক্রম শুরু করার আগেই দুই পক্ষ ভ্যাকসিনের সরবরাহ ও কম মূল্য নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা করে রেখেছিল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হিল বলেন, এই ভ্যাকসিনের দাম বেশি হবে না। এটি হবে সিঙ্গেল ডোজের একটি প্রতিষেধক। বৈশ্বিকভাবে এটি প্রস্তুত করা হবে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এর উৎপাদন হবে। এটিই আমাদের প্রাথমিক পরিকল্পনা।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণ

গালফ নিউজ বলছে, গবেষকরা এই ভ্যাকসিনের নাম দিয়েছেন সিএইচএডিওএক্স১ এনকোভ-১৯ (ChAdOx1 nCoV-19)। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশ্বে যে কয়টি গবেষণা চলছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির এই গবেষণা।

ইতোমধ্যে এটি করোনায় সংক্রমিত ছয়টি বানরের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। তারপর তাদের দেহে ভাইরাসের সংক্রমণ তুলনামূলক কম পাওয়া গেছে। সেইসঙ্গে ফুসফুসও বেশ ভালো অবস্থায় আছে।

গবেষকরা বলছেন, এই ভ্যাকসিনটি প্রাণীদের দেহে নিউমোনিয়া হতে দেয় না।

জানা গেছে, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তৈরি করা এই ভ্যাকসিন এখন মানুষের ওপর পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। লন্ডনের এক হাজার মানুষকে এই পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। তাদের ৫০০ জনের শরীরে ভ্যাকসিনটি দেয়া হবে। বাকি ৫০০ জনের ওপর অন্যান্য ওষুধ দেয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে হিল বলেন, পরীক্ষাটি এখনো প্রক্রিয়াধীন। এ বিষয়ে এখনোই কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে এইটুকু বলতে পারি এখন পর্যন্ত সবকিছু সন্তোষজনক।

এর সরবরাহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের গবেষণার সঙ্গে বিশ্বের সাতটি ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি যুক্ত আছে। ইউরোপ ও চীনভিত্তিক কোম্পানির পাশাপাশি ভারতের সিরাম ইনিস্টিটিউটও আছে এ তালিকায়। ইতোমধ্যে ভ্যাকসিনটির কয়েক কোটি ডোজ তৈরি হয়ে গেছে। শুধু আমাদের পরীক্ষাগুলোর ফলাফলের ওপর এগুলোর সরবরাহ করা বা না করা নির্ভর করছে। সবকিছু ঠিক থাকলে সেপ্টেম্বরেই ভ্যাকসিন সবার কাছে পৌঁছে যাবে বলে আসা করা যায়।

এর মূল্য প্রসঙ্গে হিল বলেন, আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল একটি ভ্যাকসিন তৈরি করা, যার স্বল্পমূল্য হবে। সব শ্রেণির মানুষ যাতে এর সুফল পায় এটিই আমাদের চাওয়া।