করোনার সংক্রমণ রোধে আশার আলো দেখাচ্ছে টি-সেল

মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় মূলত কাজ করে টি-সেল অর্থাৎ টি শ্রেণির কোষ। এই কোষ রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে সারিয়ে তোলে। বর্তমান বিশ্বে তাণ্ডব চালানো করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এর ভূমিকা কোনো ভূমিকা আছে কি না তা নিয়ে এখনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের লা জোলা ইনিস্টিটিউট ফর ইমিউনোলোজির দুই শিক্ষার্থী দাবি করছেন, ভাইরাসটিতে সংক্রমিত ব্যক্তিদের দেহে টি কোষের উৎপন্ন হয়। অনেকে এর কারণে ভাইরাসটিতে তীব্রভাবে আক্রান্ত হন না।

প্রতীকী ছবি

কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির অণুজীব বিশেষজ্ঞ এঞ্জেলা রাসমুসেন বলেন, বিষয়টি খুবই উৎসাহের সৃষ্টি করেছে। তবে এই গবেষণাটি এখনো পরিষ্কার করতে পারেনি যে, যারা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বেঁচে ফিরেছেন তাদের দেহে পুনরায় সংক্রমণ হওয়ার সুযোগ আছে কি না। কারণ তাদের দেহে শক্তিশালী টি কোষের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই গবেষণা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টায় থাকা গবেষকদের বেশ উপকারে আসবে বলে মনে করছেন তিনি।

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ১০০টিরও বেশি গবেষণা চলছে শুধু করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করার জন্য। তারা শুধু শক্তিশালী একটি এন্টিবডি তৈরির চেষ্টায় আছেন যা আসলে বি কোষ। এগুলো ভাইরাসের মধ্যে প্রবেশ করে এর গুণাবলী নষ্ট করে দেয় এবং অন্য কোনো কোষে সংক্রমণ করার ক্ষমতা হ্রাস করে দেয়। টি কোষ মূলত এই বি কোষগুলোকে উদ্দীপনা দেয়। যাতে করে বি কোষের ক্ষমতা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়ে যায়। সেইসঙ্গে টি কোষ নিজের কাজও সেরে নেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের লা জোলা ইনিস্টিটিউট ফর ইমিউনোলোজি

লা জোলা ইনিস্টিটিউট ফর ইমিউনোলোজির দুই শিক্ষার্থী শেন ক্রটি ও আলেসান্দ্রো সেত্তে এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারা খুঁজে বের করেছেন যে, কোনো বি কোষের মধ্যে টি সেল সবচেয়ে বেশি উদ্দীপনা সৃষ্টি করে। মৃদু করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়েছেন এমন ১০ জনের থেকে তারা নমুনাও সংগ্রহ করেছেন।

অণুজীব বিদ্যার বিভিন্ন তথ্য পার্যালোচনা করে তারা জানতে পেরেছেন, করোনাভাইরাস দেহে প্রবেশের পর টি কোষগুলো সেগুলোকে নষ্ট করে আঠালো পিচ্ছিল তরলে পরিণত করেছে।

গবেষণায় তারা করোনাভাইরাসের ওপর টি কোষ প্রয়োগ করে দেখেন, কোষটি ভাইরাসের ৭০ শতাংশ নষ্ট করে দেয় এবং দেহে এর বিরুদ্ধে সক্রিয় একটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে।