‘ভাইরাস প্রশ্নে’ জর্জরিত হওয়ার অপেক্ষায় চীন

নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ছড়িয়ে পড়ার জন্য চীনকেই শুরু থেকে দোষারোপ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে আরো কিছু ক্ষমতাধর দেশ। তাই আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পরিচালনা পর্ষদের সভায় চীন ভাইরাস বিষয়ে বিশ্বনেতাদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সভা- ফাইল ছবি

সম্প্রতি মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে জানায়, আগামীকাল সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডব্লিউএইচও'র পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সভা। সেখানে অনলাইনের মাধ্যমে যুক্ত থাকবে সংস্থার সদস্য দেশগুলো।

এতে আরো বলা হয়, করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার আগে চীন কেনো অন্যান্য দেশকে সতর্ক করেনি বা কীভােবে এটি এত দ্রুত সারাবিশ্বে ছড়ালো- এ বিষয়ে বৈঠকে বেইজিংকে প্রশ্ন করবেন সংস্থার সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। বৈঠকে তাইওয়ানকে অংশ নিতে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সবচেয়ে ভালো এবং স্পষ্টভাবে ধারণা দিতে পারবে প্রতিবেশী এই দেশটি।

করোনাভাইরাস- প্রতীকী ছবি

তবে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এমনিতেই চীনের সঙ্গে ডব্লিউএইচওর ভালো সম্পর্ক রয়েছে বলে চারদিকে অনেক কথাবার্তা শোনা যায়। তার ওপর এই সংকটময় পরিস্থিতিতে যদি অন্যান্য দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানায়, তাহলে দ্বিগুণ চাপে পড়বে সংস্থাটি। এমনকি এমন পদক্ষেপের ফলে বিষয়টি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও যেতে পারে।

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে আসছে, চীন সংক্রমণ রোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এমনকি দেশটি আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা নিয়েও তথ্য গোপন করেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এমন দাবির সঙ্গে একমত হয়েছে ব্রিটেন, জার্মানি, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিসে পেইনি বলেছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে চীনের স্বচ্ছতার বিষয়টি সকলের মনে উদ্বেগ তৈরি করছে।

গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শপরে প্রথম করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এরপর ধীরে ধীরে তা বিশ্বের প্রতিটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রমণের ব্যপকতা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে গত ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এটিকে মাহামারি ঘোষণা করে।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুসারে, প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৩ লাখ ১৩ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমিত হয়েছেন ৪৭ লাখেরও বেশি। সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা ১৮ লাখের কিছু বেশি।