প্রথমবারের মতো করোনা প্রতিষেধক পরীক্ষার অনুমোদন দিলো কানাডা

নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণে দিশেহারা গোটা বিশ্ব। দেশে দেশে এর প্রতিষেধক আবিষ্কারের জোর প্রস্তুতি চলছে। কয়েকটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগও শুরু হয়েছে। তবে এখনো শতভাগ কার্যকর প্রমাণিত হয়নি কোনটি। তেমনি প্রথমবারের মতো নিজ দেশের বিজ্ঞানীদের তৈরি একটি সম্ভাব্য প্রতিষেধকের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে কানাডা।

প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য প্রতিষেধকের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদন দিলো কানাডা

শনিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তার নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে 'এডি৫-এনকোভ' প্রতিষেধকটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদন ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, যেকোনো প্রতিষেধক আবিষ্কারের ক্ষেত্রেই প্রচুর পরিমাণে গবেষণা করতে হয়। গবেষণায় ভ্যাকসিনটি শতভাগ কার্যকর প্রমাণিত হলেই তারপর উৎপাদন করতে হয়। তাই পুরো প্রক্রিয়ার জন্য সময়য়ের প্রয়োজন এবং বিজ্ঞানীদের সেটি দেওয়া উচিত। করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারেও সময় লাগছে। তবে আশার খবর এই যে, ভ্যাকসিন আবিষ্কারের প্রক্রিয়া অনেকদূর এগিয়ে গেছে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো- ফাইল ছবি

তিনি আরো বলেন, কানাডার বিজ্ঞানীদের তৈরি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটি হ্যালিফ্যাক্সের ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয়ের কানাডিয়ান সেন্টার ফরল ভ্যাক্সিনোলজিতে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে। পরীক্ষা প্রতিষেধকটি শতভাগ কার্যকর প্রমাণিত হলে সেটি উৎপাদনের কাজ করবে দেশের ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল। প্রতিষেধকটি যাতে দেশেই উৎপাদন করে দ্রুত মানুষের মাঝে সরবরাহ করা যায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কানাডার স্বাস্থ্য বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সম্ভাব্য প্রতিষেধকটি নিয়ে চীনের ক্যানসিনো বায়োলজিকস কোম্পানির সঙ্গে কাজ করছে কানাডিয়ান সেন্টার ফর ভ্যাক্সিনোলজির ৪৫ সদস্যের একটি গবেষক দল। প্রতিষেধকটির মান ও সুরক্ষার বিষয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করে তারপরই এটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

কানাডিয়ান সেন্টার ফল ভ্যাক্সিনোলজির গবেষকরা বলেন, তাদের তৈরি ভ্যাকসিনটি ইতোমধ্যে চীনে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। এখন নিজের দেশে এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করা হবে। এর জন্য ৬০০ জন স্বেচ্ছাসেবী প্রয়োজন তাদের।

এ বিষয়ে কানাডিয়ান সেন্টার ফল ভ্যাক্সিনোলজির পরিচালক ও ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি এবং ইমিউনোলজি বিভাগের অধ্যাপক স্কট হ্যালপেরিন বলেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিষেধকটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করা হবে।

বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কানাডায় এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৬৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমিত হয়েছেন মোট ৭৫ হাজারের বেশি। আর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছেন প্রায় ৩৮ হাজার।