ভয়াল সেই সিডরের শক্তি ধারণ করেছে আম্ফান!

দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ উত্তরদিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে এটি ব্যাপক শক্তি অর্জন করে ধ্বংসাত্মক রূপ ধারণ করেছে। বর্তমানে এটির একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ভয়াল সিডরের শক্তি ধারণ করেছে আম্ফান

এর আগে ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২২৪ কিলোমিটার। আর ২০০৭ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডরের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ২২৩ কিলোমিটার। অর্থাৎ সিডরের গতিবেগ প্রায় ছুয়ে ফেলেছে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’। এটি আরো ঘণীভূত হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আজ সোমবার বিকেল ৩টার আবহাওয়ার তথ্য বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে।

এটি আরো ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং দিক পরিবর্তন করে মঙ্গলবার শেষরাত ও বুধবার বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চলে প্রথমে আঘাত হানতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় 'আম্পানে'র আশাপাশের সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ এবং চরসমূহও এই বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলার ও নৌকাগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করতে বলা হয়েছে। যাতে যে কোনো সময় সতর্কতা জারি করা হলে স্বল্প সময়ের মধ্যে উপকূলে ফিরে আসা যায়।

এছাড়া এই সময় কোনো মাছ ধরার নৌকা বা ট্রলারকে গভীর সমুদ্রে অবস্থান করতে বারণ করা হয়েছে।