মানুষের জীবন বাঁচাতে আর ঝাপিয়ে পড়বেন না শাহ আলম

পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় 'আম্পানে'র কবল থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিলেন স্বেচ্ছাসেবক সৈয়দ শাহ আলম। গতকাল বুধবার সকালে জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী নদীতে নৌকা ডুবে মারা যান তিনি।

ঘূর্ণিঝড় 'আম্পানে'র প্রভাবে প্লাবিত হয় পটুয়াখালীর নিম্নাঞ্চল

মারা যাওয়া সৈয়দ শাহ আলম ওই একই ইউনিয়নের লোনদা গ্রামের বাসিন্দা সৈয়দ কদম আলীর ছেলে এবং বাংলাদেশ সরকার ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কর্তৃক যৌথভাবে পরিচালিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) টিম লিডার ছিলেন।

জানা যায়, গত ৩০ বছর ধরে ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের জীবন বাঁচাতে কাজ করছিলেন শাহ আলম। ঘূর্ণিঝড় 'আম্পানে'র কবল থেকেও মানুষের জানমাল বাঁচাতে গত দুইদিন ধরে কাজ করছিলেন তিনি। বুধবার সকালেও মহাবিপদ সংকেতের মধ্যে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে ধানখালী ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী নদীর ওপারে যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন তারা ছেলে ও দুইজন স্বেচ্ছাসেবক সহকর্মী।

কিন্তু নদী পার হওয়ার সময় ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে ডুবে যায় তাদের নৌকা। এ সময় ছেলেসহ বাকি দুইজন প্রাণে বেঁচে গেলেও বাঁচতে পারেননি তিনি। শরীরে ভারী পোশাক থাকায় ডুবে যান তিনি। পরে নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ওই গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর শরীফ বলেন, শাহ আলম বিনা পারিশ্রমিকে ৩০ বছর ধরে মানবসেবা করে আসছিলেন। সব সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে ঝাপিয়ে পড়তেন অন্যকে রক্ষায়। ঘূর্ণিঝড় 'আম্পানে'র প্রভাবে গতকাল বুধবার সকাল থেকেই পায়রা ও মোংলা নদীবন্দর ও আশপাশের জেলসমূহে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছিল। এর মধ্যেই বিপন্ন মানুষের সেবায় ঝাপিয়ে পড়েছিলেন শাহ আলম।

তিনি আরো জানান, এমন একজন মানবতার জন্য নিবেদিত প্রাণের প্রয়াণ মানতেই কষ্ট হচ্ছে। তিনি এই এলাকার গর্ব ছিলেন। আর কখনো মানুষের জীবন বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না তিনি।