করোনাভাইরাস, পঙ্গপাল এবং তীব্র গরম: ভারতের অনিঃশেষ দুর্ভোগ

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সাথে বাড়ি দুঃশ্চিন্তা নিয়ে আগের হাজির হয়েছে পঙ্গপালের ঝাঁক, এবার তীব্র গরমে ভারতের নাভিশ্বাস উঠার দশা। ভারতের দিল্লিতে মঙ্গলবার রেকর্ডকৃত তাপমাত্রা ৪৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজস্থানের চুরু নামক এলাকায় রেকর্ড করা তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ভারতের সর্বোচ্চ। এ অবস্থায় লোকজনকে যতোটা সম্ভব বাড়ির ভেতরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বছরের এই সময়ে ভারতে এতো গরম গত কয়েক দশকেও পড়েনি। সারা বিশ্বের তাপমাত্রা রেকর্ড করে রাখা একটি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, মঙ্গলবার সারা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গরম ছিলো ভারতেই।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এই গরমের কারণ হলো সাইক্লোন আম্পান, যা গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ও ভারতের পূর্ব-দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানে।

আঞ্চলিক আবহাওয়া পূর্বাভাস কর্মকর্তা কুলদিপ শ্রিবাস্তব সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “ঝড়ের কারণে দেশের এক দিকের প্রকৃতি ময়েশ্চারশূন্য হয়ে গেছে।”

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাপপ্রবাহের কারণে ভারতে বেশ কিছু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অবশ্য চলতি বছরের গরম জনজীবনে কেমন প্রভাব ফেলেছে, সে বিষয়ে এখনো নির্ভরযোগ্যসূত্রে তেমন কোনো তথ্য উপাত্ত পাওয়া যায়নি।

এই গরম এমন সময়ে এলো, যখন হাজারও দিনমজুর এক শহর থেকে অন্য শহরে যাওয়ার জন্য রাস্তায় রাস্তায় অবস্থান করছে। করোনাভাইরাস যাতে না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে ভারতজুড়ে চলছে লকডাউন। দেশটিতে গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে।

প্রচুর দিনমজুর নামমাত্র খাদ্য ও পানি নিয়ে এক শহর থেকে অন্য শহরে যাচ্ছেন। এই ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণের পথে আবহাওয়ার কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এ ছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়ার ঝুঁকি তো আছেই।

আগের বছরগুলোতে গরমের কারণে প্রাণ হারানোর মধ্যে ছিলেন দিনমজুর, রিকশাচালক এবং ফুটপাথের সবজি বিক্রেতারা, যাদের সবচেয়ে বেশি রোদে থাকতে হয়।

এ দিকে, গরমের কারণে পঙ্গপাল নিধন করার চেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে। পঙ্গপালের কারণে প্রচুর ফসল নষ্ট হচ্ছে।

ভারতে যে সব এলাকায় পঙ্গপাল প্রবেশ করেছে, সেখানে অন্তত ১০০ জন লোককে পঙ্গপাল নিধনে নিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়া গাড়ির মাধ্যমে স্প্রে ছেটানো হচ্ছে।