লকডাউনের সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী

দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিস্তার মোকাবেলায় বিভিন্ন এলাকাকে জোনভিত্তিক ভাগ করে লকডাউন করার চিন্তা করছে সরকার। এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানোর কথা। আগামীকাল রোববার তিনি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন বলে জানা গেছে।

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় তিনটি জোনে ভাগ হতে পারে দেশ

শনিবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার মোকাবেলায় বিভিন্ন এলাকাকে লাল, হলুদ এবং সবুজ জোনে ভাগ করা হবে। যে এলাকায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রোগী রয়েছে সেগুলোকে লাল জোন, তার থেকে একটু কম আক্রান্ত এলাকাগুলোকে হলুদ জোন এবং খুবই কম আক্রান্ত বা একেবারেরই নেই এমন এলাকাগুলোকে সবুজ জোনে ভাগ করা হবে।

আরো জানা যায়, একটি অ্যাপের মাধ্যমে আলাদা আলাদা জোনগুলোকে চিহ্নিত করা হবে। আক্রান্ত রোগীরা সুস্থ হওয়ার সাথে সাথে জোনগুলোও পর্যায়ক্রমে লাল থেকে হলুদ এবং সবুজ হবে। এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং এটুআই প্রযুক্তিগত সহায়তার কাজ করছে।

জোনগুলো কীভাবে ভাগ করা হবে এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঢাকার কোনো এলাকায় যদি প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে ৩০ জন বা তার অধিক প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী থাকে, তাহলে সেই এলাকাকে লাল জোন হিসেবে ঘোষণা করা হবে। কোনো এলাকায় যদি ৩০ জনের কম এবং ৩ জনের বেশি আক্রান্ত ব্যক্তি থাকে তাহলে সেই এলাকাকে হলুদ জোন হিসেবে ঘোষণা করা হবে। আর কোনো এলাকায় যদি এক বা দুইজন আক্রান্ত ব্যক্তি থাকে বা একেবারেই কেউ আক্রান্ত না থাকে তাহলে সেই এলাকা হবে সবুজ জোন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়

এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) হাবিবুর রহমান খান বলেন, সেসব এলাকাকে লাল জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে, সেই সব এলাকা সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ করা হবে। এসব এলাকা থেকে কেউ যেমন বের হতে পারবে না, তেমনি কেউ প্রবেশও করতে পারবে না। লাল জোন চিহ্নিত এলাকার বাসিন্দাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তাদের প্রয়োজন মতো বাসায় পৌঁছে দেয়া হবে। হলুদ জোনের বাসিন্দাদের চলাফেরা সীমিত করা হবে। আর সবুজ জোনের আওতাধীন বাসিন্দারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাধারণভাবেই চলাফেরা করতে পারবেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বর চিহ্নিত করে একটি অ্যাপের মাধ্যমে জোনগুলো ভাগ করা হবে। অ্যাপের মানচিত্রে আক্রান্তে ঘনত্বর অনুযায়ী জোন ঘোষণা করা হবে। প্রতিদিন আক্রান্ত ও সুস্থতার তথ্য অনুযায়ী সেই মানচিত্র আপডেট করা হবে।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, দেশের প্রতিটি এলাকাকে তিনটি জোনে ভাগ করে একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেটি আজ শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হবে। এরপর তিনি সার্বিক বিষয়টি দেখে কিছু সংযোজন বা বিয়োজন করে আগামীকাল সিদ্ধান্ত দেবেন। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রীর।

কোন কোন এলাকাগুলোকে লাল জোন হিসেবে ঘোষণা করা হতে পারে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের যেসব এলাকায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রোগী রয়েছে সেগুলোকে লাল জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। পাশপাশি দেশের অন্যান্য জেলায় যেখােনে অনেক বেশি আক্রান্ত রোগী রয়েছে, সেগুলোকে লাল জোন করা হবে।