ট্রাম্পের ‘প্রতিশোধ’

সম্প্রতি জার্মানি থেকে বড় সংখ্যায় মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অবশেষে সেই ইঙ্গিতকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করলো ট্রাম্প প্রশাসন। এক টুইট বার্তায় আনুষ্ঠানিকভাবে সেই ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার।

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

জানা গেছে, বর্তমানে জার্মানিতে প্রায় ৩৬ হাজার মার্কিন সৈন্য অবস্থান করছে। তাদের মধ্যে ১১ হাজার ৯০০ সৈন্যকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। ফলে জার্মানিতে দেশটির সৈন্য সংখ্যা দাঁড়াবে মাত্র ২৪ হাজার। অন্যদিকে, সরিয়ে নেয়া সৈন্যদের মধ্যে ৫ হাজার ৬০০ জনকে ন্যাটোর অন্যান্য কিছু সদস্য দেশে মোতায়েন করা হবে। বাকি সৈন্যদের যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনা হবে।

এ বিষয়ে বুধবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার বলেন, পদক্ষেপটি নেয়ার পরও সার্বিকভাবে সামরিক জোট ন্যাটোর শক্তি আরো জোরদার হবে। পাশাপাশি রাশিয়াকে বাধা দেবার ক্ষমতা বজায় রাখা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত নমনীয়তাও আরো উন্নত করা হবে। এর মধ্যে কিছু সিদ্ধান্ত আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর করা হবে। বাকিগুলোর জন্য অনেক সময় লাগবে।

ইউরোপে মার্কিন কমান্ড ও বিশেষ অভিযানের সামরিক সদরদপ্তর জার্মানি থেকে সরিয়ে বেলজিয়ামে স্থানান্তরিত করা হবে বলেও এ সময় জানান মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

এর আগে সম্প্রতি জার্মানি থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করে বলেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জার্মানি তাদের সামরিক ব্যয় বাড়ায়নি। এর ফলে ন্যাটোর কোটি কোটি ডলার ক্ষতি হচ্ছে। অথচ জার্মানি বলছে, মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ফলে সে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য ভালো হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত সামরিক জোট ন্যাটোকে জোর ধাক্কা দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কে ব্যাপক দূরত্ব সৃষ্টি করেছে। ওয়াশিংটনকে এর আগে কখনো ইউরোপ প্রশ্নে এমন আত্মবিধ্বংসী সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায়নি। অথচ ট্রাম্প প্রশাসন প্রতিনিয়ত এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের মধ্যে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর সামরিক ব্যয় জাতীয় গড় আয়ের কমপক্ষে দুই শতাংশ রাখার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। যদিও জার্মানিসহ অনেক দেশ এখনো সেই মাত্রায় ব্যয় বাড়ায়নি। ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রতিশোধ নিয়েই ছাড়লেন বলে জার্মান গণমাধ্যমে মন্তব্য করা হয়েছে।