শেষ হলো হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল পবিত্র হজ। এ বছর হজে বিশ্বের মাত্র ১০ হাজার সৌভাগ্যবান মানুষ অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন। তারা আজ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আরাফাতের ময়দানে হজ পালনে জড়ো হন।

পবিত্র হজ

আজ বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ২৮ মিনিটে ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে অবস্থিত মসজিদে নামিরা থেকে সালাম দিয়ে হজের খুতবা শুরু করেন নতুন খতিব শায়খ ড. আব্দুল্লাহ ইবনে সুলাইমান আল-মানিয়া।

খুতবার শুরুতে মহান আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পাঠ করেন। এরপর জাবালে রহমতের পাদদেশে ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে হাজিদের উদ্দেশে দেয়া খুতবায় মরণব্যাধী মহামারি করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি কামনা করেন।

এ সময় গোনাহ মাফ, আল্লাহর রহমত কামনাসহ সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে বিশ্ববাসীর প্রতি নানা নির্দেশনামূলক বক্তব্য তুলে ধরেন শায়খ ড. আব্দুল্লাহ ইবনে সুলাইমান আল-মানিয়া।

খুতবায় মানুষের অধিকার, বিশেষ করে নারীর অধিকার ও উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টনের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে শায়খ মানিয়া বলেন, ওয়াদা রক্ষা করা, মা-বাবার সেবা, সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ, মানব সেবা, রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় নাগরিকদের সচেতন হতে হবে।

পবিত্র হজ

কোরআনে কারিমের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে মানুষকে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ অনুসারী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইবাদত-বন্দেগির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেন এই খতিব। এ ছাড়া আরাফাতের ময়দানে করণীয়সহ হজের পরবর্তী বিষয়গুলো এবং নামাজ, পবিত্রতা অর্জন, রোগীর সেবা, মহামারি উপদ্রুত এলাকায় প্রবেশ না করা এবং ওইসব এলাকা থেকে অন্যত্র না যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি।

আধ ঘণ্টাব্যাপী চলমান এই খুতবার শেষে সৌদি আরবের সরকার, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করেন শায়খ মানিয়া। করোনাকে মহামারি উল্লেখ করে, এর থেকে বিশ্ববাসীর হেফাজত ও রোগ মুক্তির জন্যও দোয়া করেন।

খুতবা শেষে জোহরের নামাজের আজান দেন মসজিদে হারামের মুয়াজ্জিন শায়খ ইমাদ বিন আলি ইসমাইল। এর পর খতিব হাজিদের নিয়ে দুই ইকামতে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করেন। ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা হজের অন্যতম ফরজ। আজ হাজিরা সেখানেই অবস্থান করবেন।

বুধবার থেকে শুরু হয়েছে এ বছরের হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। করোনাভাইরাসের কারণে এবার মাত্র ১০ হাজার মানুষ হজের অনুমতি পেয়েছেন। অংশ নেয়ার আগে সবাই বাধ্যতামূলক ৭ দিনের আইসোলেশন পালন করেছেন।