বেঁচে আছেন সেই বাবা

ময়মনসিংহে আজ মঙ্গলবার সকালে একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে পুকুরে পড়ে যায়। এতে প্রাণ হারান একই পরিবারের ৮ সদস্য। জীবিত উদ্ধার করা হয় ওই পরিবারেরই আরো ৬ জনকে।

এভাবেই মেয়ে বুলবুলিকে আকড়ে ধরে আর্তনাদ করছিলেন বাবা শাহজাহান

এই মর্মন্তিক দুর্ঘটনার পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয় একটি মর্মস্পর্শী ছবি। যেখানে দেখা যায়, এক বাবা তার মৃত ছোট্ট মেয়েকে বুকের মধ্যে ঝড়িয়ে ধরে মাটিতে শুয়ে আছেন। কিন্তু এটি স্থিরচিত্র হওয়ায় অনেকে মেনে করেছেন বাবা-মেয়ে দুজনেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন এবং দুর্ঘটনার সময় তিনি মেয়েকে এভাবেই বুকের মধ্যে আগলে রেখেছিলেন।

অনেকে এই মর্মস্পর্শী ছবিটি ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ারও দিয়েছেন। সঙ্গে লিখেছেন আবেগঘন স্ট্যাটাস। কিন্তু পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুর্ঘটনায় মেয়ে মারা গেলেও বেঁচে আছেন বাবা। সাত বছর বয়সী মেয়ে বুলবুলির মৃত্যুর পর এভাবেই তার মরদেহ আকড়ে ধরে আর্তনাদ করছিলেন বাবা শাহজাহান (৪০)।

দুর্ঘটনার পর হতহতদের উদ্ধার করছেন ফায়ার সাভির্সের সদস্যরা

দুর্ঘটনার পর অনেক চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেননি মেয়েকে। তাইতো শোকে বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন শাহজাহান। মেয়েকে বুকে জড়িয়ে করছেন আর্তনাদ। আর তখনই ছবিটি তোলা হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বাবা-মেয়ে দুজনকেই মৃত ভাবেন অনেকে।

এ দুর্ঘটনায় আরো প্রাণ হারান- ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বিরুনীয়া ইউনিয়নের বাকশী গ্রামের বেগম (৩০) ও মিলুয়ারা বেগম (৬৫), শেখ বাজার গ্রামের রিপা খাতুন (৩০) ও রেজিয়া খাতুন (৫৩), গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী গ্রামের পারুল আক্তার (৩০) ও শামসুল হক (৬৫) এবং তারাকান্দা উপজেলার দাদরা গ্রামের নবী হোসেন (৩০)। তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য।

ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমারত হোসেন গাজী জানান, মাইক্রোবাসে একই পরিবারের ১৪ জন সদস্য ছিলেন। তারা ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা থেকে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে যাচ্ছিলেন। পথে ময়মনসিংহ-শেরপুর মহাসড়কের ফুলপুর উপজেলার পশ্চিম বাসাতি এলাকায় আসলে মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং ৮ জনকে মৃত ও ৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করেন।