‘১০ টাকার চাল’ কর্মসূচিতে সাড়ে চার লাখ ভুয়া কার্ড!

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় সরকার গরিব মানুষের জন্য প্রতি কেজি চাল ১০ টাকায় বিক্রয় করছে। এজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কর্তৃক দরিদ্র মানুষের তালিকা করে কার্ড ইস্যু করা হয়েছিল। কিন্তু অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, লাখ লাখ ভুয়া কার্ডধারীরা সরকারের দেওয়া এই সুবিধা ভোগ করছেন বছরের পর বছর। খাদ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে অভিযান পরিচালনার পর এখন পর্যন্ত বেরিয়ে এসেছে সাড়ে চার লাখ ভুয়া কার্ড!

যে ব্যক্তি চার বছর আগে মারা গেছেন তার কার্ড দিয়ে সুবিধা নেওয়া হচ্ছে এখন পর্যন্ত। যার নামে কার্ড ইস্যু করা হয়েছে তিনি জানেনই না, অথচ বছরের পর বছর চাল তুলে নেওয়া হচ্ছে। যার কোনো অভাব নেই, সেও সরকারি এই কার্ডের অধিকারী। সম্পূর্ণ সচ্ছল মানুষও সুবিধা ভোগ করছেন। এছাড়া জনপ্রতিনিধিদের আত্মীয়-স্বজনদের কথা তো বলাই বাহুল্য। এভাবে লাখ লাখ ভুয়া কার্ডধারীরা অবৈধভাবে সরকারের এই সুবিধা আত্মসাৎ করে যাচ্ছে।

দেশজুড়ে এমন হাজার হাজার অভিযোগ। বাধ্য হয়ে এক পর্যায়ে ভুয়া কার্ডধারীদের খুঁজে বের করতে নির্দেশনা দেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। এ নিয়ে গত মার্চে সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের (ডিসি-ফুড) কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। খাদ্য অধিদপ্তর এ নিয়ে আলাদা একটি কমিটিও গঠন করেছে। অনুসন্ধানের এই প্রক্রিয়া এখনো চলমান। তবে তার আগেই বেরিয়ে এসেছে ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৮৫৫টি ভুয়া কার্ড।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার

খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ বলেন, অনুসন্ধান চলছে। বেশ কয়েকটি জেলা থেকে এখনো আমরা রিপোর্ট পাইনি। সে হিসেবে আরো অনেক ভুয়া কার্ড বের হওয়ার কথা। এসব কার্ড চিহ্নিত করার সঙ্গে সঙ্গেই সেগুলো বাতিল করা হচ্ছে। এরপর নতুন করে প্রকৃত দরিদ্র মানুষের তালিকা তৈরি করা হবে এবং এরপর থেকে এই কার্ডকে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।