আরো বেড়েছে কাঁচা মরিচের ঝাল

গত বেশ কিছুদিন ধরে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে রান্নার অন্যতম উপকরণ কাঁচামরিচ। গত কয়দিনের তুলনার আজ এর ঝাল আরো বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টি আর বন্যার কারণে দাম এখন চড়া। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে সামনে দাম আরো বাড়তে পারে। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, দিন দিন কাঁচা মরিচের দাম সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। এখন খুবই অল্প পরিমাণে কিনতে পারলেও এভাবে দাম বাড়তে থাকলে এইটুকুও আর কেনা যাবে না।

আরো বেড়েছে কাঁচা মরিচের ঝাল

আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৮০ টাকায়। ২৫০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। অথচ দুই-তিন দিন আগেও মরিচের কেজি ছিলো ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। ২৫০ গ্রাম কিনলে যার দাম পড়তো ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।

তবে কিছু কিছু জায়গায় আজও ১৮০ টাকা কেজি (২৫০ গ্রাম ৫০ টাকা) দরে বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য তুলনামূলক দাম কিছুটা কম হলেও এসব মরিচের মান তেমন ভালো নয়। ২৫০ গ্রাম মরিচ কিনলে এর অর্ধেকই ফেলে দিতে হয়।

দামের বিষয়ে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, দেশে চলমান বন্যা আর বৃষ্টি পরিস্থিতির কারণে প্রচুর পরিমাণ কাঁচা মরিচ নষ্ট হয়ে গেছে। তাই রাজধানীতে এর সরবরাহ অনেক কম। ফলে দামটাও অনেক বেশি। এভাবে আর কিছুদিন চললে মরিচের দাম ৩০০ টাকাও হতে পারে। এতে ব্যবসায়ীদের কিছুই করার নেই।

দাম বাড়তি অন্যান্য শাক-সবজিরও

রাজধানীর মালিবাগের ব্যবসায়ীরা জানান, গত বুধবারও তারা ১ কেজি কাঁচা মরিচ ২০০ টাকায় বিক্রি করেছেন। কিন্তু আজ বিক্রি করছেন ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায়। কাঁচা মরিচের দাম গত দুই মাস ধরেই বেশি। তবে আজ হঠাৎ করে এর দাম আকাশ ছুঁয়েছে। এ পণ্যটি আড়ত থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে তাদের, তাই চাইলেও কম দামে বিক্রি করতে পারছেন না তারা। আবার দাম বাড়ায় আগের মতো মরিচ বিক্রিও হচ্ছে না।

এই বাজারের সুমন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, আগে প্রতিদিন ৫-৬ কেজি কাঁচা মরিচ আনতেন। কিন্তু এখন দাম বাড়ায় মাত্র ২ থেকে ৩ কেজি আনছেন। ক্রেতারাও এখন কম পরিমাণে মরিচ কিনছেন।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাজার করতে এসেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করা রিফাত আহমেদ। তিনি জানান, গত কিছুদিন ধরেই কাঁচা মরিচের দাম বেশি। গত সপ্তাহে যে দামে কিনেছেন, আজ দাম তার থেকেও বেশি। তাই আগে প্রতি সপ্তাহে আধা কেজি কনলেও এখন মাত্র ২৫০ গ্রাম কিনছেন। কিন্তু এভাবে দাম বাড়তে থাকলে হয়তো এ উপকরণটি কেনাই বন্ধ করে দিতে হবে।

কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা এক ক্রেতা বলেন, জিনিসের দাম বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের কোনো কারণ প্রয়োজন হয় না। এখন তাও বন্যা আর বৃষ্টির অজুহাত দিচ্ছে। আর দাম বাড়লেও ক্রেতাদের কিছু করার নেই। তার প্রমাণ পেঁয়াজের ঝাঁঝ বাড়ার সময়ই সবাই দেখেছে।

শুধু কাঁচা মরিচ নয়, বৃষ্টির কারণে দাম বেড়েছে অন্যান্য শাক-সবজিরও। রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি আঁটি পুঁইশাক বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। আর লাল শাক, ডাটা শাক, কলমির শাক বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা প্রতি আঁটি। কোনো শাকই ২০ টাকার নিচে আঁটি পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে কচু ছাড়া কোনো সবজিই ৫০ টাকার নিচে বিক্রি হচ্ছে না। শুধু কচুর মুখির দাম প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া টমেটো প্রতি কেজি ১১০-১৩০ টাকা, করলা ৮০-১০০ টাকা, কাকরোল ৬০-৭০ টাকা, গাজর ৯০-১১০ টাকা, বেগুন ৮০-১০০ টাকা, পটল ৫০-৬০ টাকা, ঢেড়স ৫০-৬০ টাকা, চিচিংগা ৫০-৬০ টাকা, বরবটি ৭০-৯০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৭০ টাকা। ধুন্দল ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া লাউ প্রতি পিস ৬০-৭০ টাকা, কাঁচা কলা এক হালি ৩০-৪০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতি পিস ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি দাম বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ ও ডিমেরও।