সন্তানকে বাঁচাতে বাবার নদীতে ঝাঁপ, নিখোঁজ দুজনই

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মধুমতি নদীতে ঘুরতে গিয়েছিলেন পুলিশ সদস্য মো. আবু মুসা রেজওয়ান। হঠাৎ তাদের বহনকারী ট্রালারটি একটি নির্মাণাধীন সেতুর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে তার ছয় মাস বয়সী ছেলে নদীতে পড়ে যায়। প্রাণপ্রিয় একমাত্র সন্তানকে বাঁচাতে খরস্রোতা নদীতে লাফ দেন রেজওয়ানও। কিন্তু সন্তানকে তো বাঁচাতে পারেনিনি, তলিয়ে গেছেন নিজেও।

সন্তানকে বাঁচাতে বাবার নদীতে ঝাপ, নিখোঁজ দুজনই। ছবি- সংগৃহীত

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার মধুমতি নদীর কালনা-শংকরপাশা ফেরিঘার এলাকায়। ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন তারা দুজন। তাদের উদ্ধারে এখনো অভিযান চালাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাসহ ফায়ার সার্ভিস ও নৌ-বাহিনীর ডুবুরি দল।

নিখোঁজ পুলিশ সদস্য মো. আবু মুসা রেজওয়ান রাজধানীতে পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের চাঁচাই গ্রামে। তিনি ওই এলাকার আবুল কালাম আজাদের ছেলে। তার নিখোঁজ শিশুটির নাম আনাস।

কাশিয়ানী থানা- ফাইল ছবি

নিহত পুলিশ সদস্যের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ছুটিতে বাড়িতে যান রেজওয়ান। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে মধুমতি নদীতে ঘুরতে যান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী সাজিয়া ইসলাম (২৪), একমাত্র ছেলে আনাস (৬ মাস), বোন রুনা খানম (২৫), ভগ্নিপতি মো. আল আমিন (২৭) এবং তাদের মেয়ে রিমি খানম (৫)।

তারা নদীতে ঘোরার জন্য গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার ভাটিয়াপাড়া বাজার এলাকা থেকে একটি ট্রলার ভাড়া করেন। সন্ধ্যার পর তাদের বহনকারী ট্রালারটি ঘুরতে ঘুরতে কালনা-শংকরপাশা ফেরিঘাট এলাকায় এলে একটি নির্মাণাধীন সেতুর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এ সময় ছোট্ট আনাস পানিতে পড়ে যায়। তাকে বাঁচাতে সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপ দেন রেজওয়ান। তাৎক্ষণিকভাবে লাফ দেন ট্রলার চালকও। কিন্তু বাবা আর ছেলেকে উদ্ধার করতে পারেননি তিনি। পরে খবর পেয়ে কাশিয়ানী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিখোঁজদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান বলেন, স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস ও নৌ-বাহিনীর ডুবুরিরা মৃতদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে। তবে শনিবার বিকেল পর্যন্ত তাদের মৃতদেহ পাওয়া যায়নি।