একই স্থানে ভেসে উঠলো বাবা-ছেলের মরদেহ

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মধুমতী নদীতে ঘুরতে গিয়ে পানিতে পড়ে নিখোঁজ হওয়া সেই পুলিশ কনস্টেবল মো. আবু মুসা রেজওয়ান (২৮) ও তার ৬ মাস বয়সী শিশুপুত্র আনাসের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার সাড়ে ৭ ঘণ্টার ব্যবধানে তাদের দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ কনস্টেবল মো. আবু মুসা রেজওয়ান (২৮) ও তার ৬ মাস বয়সী শিশুপুত্র আনাস। ছবি- সংগৃহীত

আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মহিষাপাড়া এলাকায় মধুমতী নদী থেকে প্রথমে মো. আবু মুসা রেজওয়ানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এর প্রায় সাড়ে ৭ ঘণ্টা পর বিকেল ৪টার দিকে একই স্থান থেকে তার ছেলের মৃতদেহও উদ্ধার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে লোহাগড়া ফায়ার সার্ভিসের তত্ত্বাবধায়ক মাসুদ রানা জানান, আজ সকালে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দক্ষিণে রেজয়ানের মৃতদেহ ভাসতে দেখেন এলাকাবাসী। পরে তার পরিবারের সদস্যদের খবর দেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সহায়তায় নদী থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর দুপুরের দিকে তার দাফন সম্পন্ন হয়। তখন তার ছোট্ট শিশু আনাস নিখোঁজ ছিলো। পরে বিকেল ৪টার দিকে ঠিক একই স্থানে ভেসে ‍উঠে তার মৃতদেহও।

গতকাল শনিবার দিনভর তাদের উদ্ধারে চালানো হয় অভিযান

পুলিশ সদস্য মো. আবু মুসা রেজওয়ান রাজধানীতে পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের চাঁচাই গ্রামে। তিনি ওই এলাকার আবুল কালাম আজাদের ছেলে।

এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যার সময় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার মধুমতি নদীর কালনা-শংকরপাশা ফেরিঘার এলাকায় ট্রলার থেকে পড়ে নিখোঁজ হন রেজওয়ান ও আনাস। ঘটনার পর থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের মৃতদেহ উদ্ধারে নদীতে অভিযান চালায় নৌ-বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবরি দল। কিন্তু নিখোঁজের ২৪ ঘণ্টায়ও তাদের না পাওয়া যাওয়ায় গতকাল সন্ধ্যায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। পরে আজ রোববার তাদের দুইজনের মৃতদেহ ঘটনাস্থলে সাড়ে সাত কিলোমিটার দূরে ভেসে ওঠে।

নিহত পুলিশ সদস্যের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ছুটিতে বাড়িতে যান রেজওয়ান। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে মধুমতি নদীতে ঘুরতে যান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী সাজিয়া ইসলাম (২৪), একমাত্র ছেলে আনাস (৬ মাস), বোন রুনা খানম (২৫), ভগ্নিপতি মো. আল আমিন (২৭) এবং তাদের মেয়ে রিমি খানম (৫)।

তারা নদীতে ঘোরার জন্য গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার ভাটিয়াপাড়া বাজার এলাকা থেকে একটি ট্রলার ভাড়া করেন। সন্ধ্যার পর তাদের বহনকারী ট্রালারটি ঘুরতে ঘুরতে কালনা-শংকরপাশা ফেরিঘাট এলাকায় এলে একটি নির্মাণাধীন সেতুর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এ সময় ছোট্ট আনাস পানিতে পড়ে যায়। তাকে বাঁচাতে সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপ দেন রেজওয়ান। তাৎক্ষণিকভাবে লাফ দেন ট্রলার চালকও। কিন্তু বাবা আর ছেলেকে উদ্ধার করতে পারেননি তিনি। পরে খবর পেয়ে কাশিয়ানী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিখোঁজদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করে।