লেনদেন সীমিত করেছে ৫ বেসরকারি ব্যাংক

সম্প্রতি সাইবার হামলার আশঙ্কা করে দেশের সবগুলো ব্যাংককে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরই লেনদেনের বিষয়ে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ জোরদার করাসহ বিভিন্ন ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রতিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে দেশের ৫টি বেসরকারি ব্যাংক হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি এড়াতে সীমিত করেছে তাদের লেনদেন।

ট্রাস্ট ব্যাংক, দ্য সিটি ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক

লেনদেন সীমিত করা ব্যাংকগুলো হলো- সিটি ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্কতার পর দেশের প্রতিটি ব্যাংক এডিসি, আইটি ও কার্ডের সমন্বয়ে জরুরি ভিত্তিতে তাদের লেনদেন সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা চালু করে। বেসরকারি এ ৫টি ব্যাংক নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে আরো বেশকিছু নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ঝুঁকি এড়াতে সিদ্ধান্ত নেয় দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময় এটিএম বুথ ও অনলাইন ব্যাংকিংয়ে লেনদেন বন্ধ রাখার।

বেসরকারি পাঁচ ব্যাংকের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো- রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত এটিএম বুথগুলোতে লেনদেন বন্ধ রাখা, এটিএম থেকে ইএমভি লেনদেন বন্ধ রাখা, রাত ৮টার পর থেকে সকাল পর্যন্ত বিইএফটিএন ও সুইফট লেনদেন বন্ধ রাখা, এনপিএসবি চ্যানেল বন্ধ রাখা এবং ভিসা, মাস্টারকার্ড, অ্যামেক্স ও চায়না ইউনিয়ন পের লেনদেন বন্ধ রাখা।

ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড

বিষয়টি নিশ্চিত করে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন বলেন, আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কতার প্রেক্ষিতে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি এড়াতে এসব নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে গ্রাহকের কষ্টে অর্জিত অর্থ নিরাপদ রাখা যায়। দেশে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ গ্রাহক সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে। তাই কার্ডের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন নিরাপদ করতে সিটি ব্যাংকের এটিএম বুথগুলোতে অন্য ব্যাংকের কার্ড গ্রহণ করা আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।

সম্প্রতি একাধিক মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সতর্কতা জারি করে করে জানায়, হ্যাকারদের একটি দল সাইবার হামলার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। ‘বিগল বয়েজ’ নামের এ হ্যাকার দলটি উত্তর কোরিয়ার। তবে এর সঙ্গে বিভিন্ন হ্যাকার গোষ্ঠি জড়িত। এর আগেও তারা এটিএম বুথ ও ভুয়া লেনদেনের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কোটি কোটি ডলার হাতিয়ে নিয়েছে।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড

মার্কিন গোয়েন্দাদের এমন তথ্যের পর গত ২৭ আগস্ট দেশের সবগুলো ব্যাংকে সতর্ক করে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চিঠিতে বলা হয়, সাইবার হামলার মাধ্যমে হ্যাকাররা ব্যাংক থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতে পারে, এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতেই বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেশের ব্যাংকগুলো।