টেস্ট দিয়েই ফেরার লক্ষ্য আশরাফুলের

বাংলাদেশ দলে ধ্রুবতারার মতোই আবির্ভাব ঘটে মোহাম্মদ আশরাফুলের। ক্রিকেট খেলে কীভাবে তারকা খ্যাতি অর্জন করা যায়, সেটা দেশের মানুষকে তিনিই প্রথম দেখিয়েছেন। তবে অল্পতেই কামানো যশ-খ্যাতির ভরটাই হয়তো নিতে পারেননি এই ব্যাটসম্যান। তাই সময়ের ব্যবধানে তার পারফরম্যান্সে ভাটা পড়তে থাকে। সেই সুবাধে দেখে ফেলেন মুদ্রার উল্টো পিঠ।

২০০১ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু আশরাফুলের। সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেক ম্যাচেই  হাঁকান দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। যে রেকর্ড এখনও পর্যন্ত স্পর্শ করতে পারেনি অন্য কেউ। 

বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বপ্রথম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পান মুশফিকুর রহিম। ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ওই ম্যাচেই ১৯১ রানের ইনিংস খেলে আউট হন আশরাফুল। রঙ্গনা হেরাথের বলে ক্যাচ দিয়ে না ফিরলে হয়তো অ্যাশই হতে পারতেন দেশীয়দের মধ্যে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে প্রথম দুইশ রান করা ব্যাটসম্যান। 

ওই সিরিজের পর আর দেশের জার্সি গায়ে চাপানো হয়নি আশরাফুলের। ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে প্রায় ৮ বছর ধরে আছেন দলের বাইরে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে অনেক আগেই। তাই সাবেক অধিনায়কের লক্ষ্য, টেস্ট দিয়েই নিজের হারানো জায়গা পুনরুদ্ধার করবেন তিনি।

সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পেইজের লাইভ আড্ডায় অ্যাশ বলেন, ‘আমার লক্ষ্য পাঁচদিনের ক্রিকেট দিয়ে দলে ঢুকা। কারণ এখানে চাপ খুবই কম। সাদা বলের ক্রিকেটে রান করার তাড়া আছে। কিন্তু টেস্টে সেটা নেই। উইকেটে সেট হয়ে গেলে লম্বা ইনিংস খেলা যায়। আমার সে অভিজ্ঞতা আছে।’

দলে ফিরতে আশাবাদী আশরাফুল। বলছেন আগের তুলনায় এখন বেশি আত্মবিশ্বাসী তিনি, ‘আগে আত্মবিশ্বাস ছিল একদিন দলে জায়গা পেয়ে সবার আশা পূরণ করব। কিন্তু এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী আমি। মনে করি এটা সম্ভব। অপেক্ষা শুধু মাঠে নামার।’ 

শেষ কয়েকমাস ফিটনেস নিয়ে অনেক পরিশ্রম করেন আশরাফুল। ঝরিয়ে ফেলেন অতিরিক্ত ওজন। মূলত ক্রিকেটে নিয়মিত হতেই তার এই উদ্যোগ। মনে করেন, সহজেই আরও তিন-চার বছর দলে খেলতে পারবেন, ‘গত বছরের তুলনায় বর্তমানে আমার যে ফিটনেস, তাতে সহজেই আরও তিন-চার বছর সার্ভিস দিতে পারবো। কারণ আমি একজন ব্যাটসম্যান।’

ভক্তরাই আশরাফুলের অনুপ্রেরণা। দলের বাইরে থাকার পরও অনেকের ভালোবাসা পান। তাই আবারও লাল-সবুজের জার্সির প্রতিনিধিত্ব করতে চান কার্ফিফ কাব্যের নায়ক, ‘সাত বছরের বেশি সময় ধরে দলের বাইরে আছি। তবুও মানুষ আমাকে সাপোর্ট করে যাচ্ছেন। এজন্য নিজেকে ভাগ্যমান মনে হয়। তাই আমি দলে ফেরার চেষ্টা করছি।’

কালের পরিক্রমায় বাংলাদেশ এখন ক্রিকেট বিশ্বের পরিচিত মুখ। যেকোনো দলই টাইগারদের সমীহের চোখে দেখে। দলে আছেন মুশফিক, মমিনুল, লিটন, সৌম্যদের মতো ব্যাটম্যানরা। তাই জায়গা পাওয়াটা যে এতো সহজ হবেনা সেটাও জানা আছে আশরাফুলের। জানিয়ে দিলেন, ভালো পারফর্ম করেই ফিরে আসবেন তিনি, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে এক্সট্রা-অর্ডিনারি পারফরম্যান্স করেই দলে ফিরতে হবে। আমি সেটার জন্য তৈরী। যেন সুযোগটা পাই, সবাই সেই দোয়া করবেন। কারণ সুযোগ না পেলে অনেক কঠিন হবে।’